জল জমেছে
কোথাও জল জমেছে হাসপাতাল এলাকার মধ্যেই, তো কোথাও মশার লার্ভা ভেসে বেড়াচ্ছে মজে যাওয়া নালায়। জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, ট্যাবলো থেকে মশা মারার কামান— রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে টনক নড়েছে তাদের সব মহলের!
প্রশাসনের দাবি, জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে শিক্ষা এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছেন। জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গি এবং মশা বাহিত রোগ নিয়ে নানা ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে সংশ্লিষ্ট মহল। জেলার মানুষ বলছেন, প্রশাসন যদি একটু আগেই সতর্ক হত, তাহলে বোধহয় এতখানি বিপদ ছড়াতো না। এখনও পর্যন্ত বীরভূম জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা চার হলেও, জ্বরের আতঙ্ক ছড়িয়েছে জেলার নানা প্রান্তে। চিকিৎকরাও রক্ত পরীক্ষা করতে পাঠাচ্ছেন জেলা সদরে।
পুরসভা বা পঞ্চায়েতের উদ্যোগে কোথাও কোথাও এলাকার জলা জঙ্গল যেমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে তেমনই মশার নিধনে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ। বোলপুর পুরসভার উদ্যোগে ইতিমধ্যে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মশা নিধন তেল দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। মহকুমা হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার এবং স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক এবং সেবিকাদের নিয়ে কাউন্সিলরদের সঙ্গে সচেতনতা বৈঠকও হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা এবং রক্তের নমুনা সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছেন সুপার। এমন উদ্যোগের পাশে রয়েছে জল জমা ও রাস্তার ধারে আবর্জনা ছড়িয়ে থাকার ছবিও।
এ দিনই বোলপুরের কাশিমবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এলাকার বস্তি অঞ্চলে স্কুল পড়ুয়াদের দিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি পালন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মশা বাহিত রোগ সম্পর্কে সচেতন করতে পোস্টার নিয়ে পথে নামে পড়ুয়ারা।
সচেতনতার কর্মসূচির ফাঁকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমার ছবি মিলল। বোলপুর কলেজ রোড, রামকৃষ্ণ রোড, হাটতলা, বাঁধগড়া এলাকায় রাস্তার মাঝে আবর্জনা পড়ে থাকতেও দেখা গেল এ দিন।
তবে রামপুরহাট মহকুমা এবং সিউড়ি সদরের একাধিক পুরসভা এবং পঞ্চায়েত এলাকায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে জোর কদমে ডেঙ্গি সচেতন কর্মসূচি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহায়তায়, এলাকার স্বাস্থ্য দফতরও একই ভাবে নিয়েছে ওই এলাকাগুলিতে সচেতনতার কর্মসূচি। প্রচার অভিযান কর্মসূচির পাশাপাশি নিকাশি নালা, জলাশয় এবং জল জমার জায়গায় ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার, চুন। জন সমাগমের জায়গা, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দেওয়া হয়েছে মশাবাহিত রোগ বিশেষ করে ডেঙ্গির সতর্কতা মূলক পোস্টার। মশা মারার জন্য সম্ভাব্য এলাকায় বিশেষ তেল ছেটানো সহ চলছে ধোঁয়া দেওয়ার কাজও। একাধিক পুর এলাকায় পড়ুয়াদের পাশাপাশি স্বেছাসেবী সংস্থা এবং পুর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ঘুরছে ট্যাবলো। তাছাড়াও, সিউড়ি এবং দুবরাজপুর এলাকায় ফাইলেরিয়া নির্মূল কর্মসূচিতে গণ ওষুধ সেবন কর্মসূচিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওষুধ দেওয়ার সময়ে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।
কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে হাজির হচ্ছেন স্বয়ং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়িও।