কলহপুর গ্রামে মৎস্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজো। নিজস্ব চিত্র
ভোজ থেকে সিঁদুর খেলা, সবেতেই এ বার কাটছাঁট করা হচ্ছে মুরারইয়ের কলহপুর গ্রামে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বাড়ির পুজোয়। ২৭৩ বছরের পুরনো এই পুজো হয় বৈষ্ণবমতে। সন্ধিপুজোর সময় কুমড়ো বলি দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। কমললোচন ঘোষ প্রথম এই পুজো শুরু করেন। কমললোচনের ভাই রামলোচনের এক মাত্র মেয়ে গয়াসুন্দরী ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় নলহাটির জগধরী গ্রামের বক্রনাথ সিংহের সঙ্গে। সেই সূত্রে ঘোষ ও সিংহ পরিবারের পুজো হয় যৌথ ভাবে।
এত দিন একাদশীতে বহু মানুষজনকে নিয়ে সৌহার্দ্য বিনিময় ও খাবারের ব্যবস্থা থাকত। ভোজের আয়োজন ও প্যান্ডেল শুরু হয়ে যেত অনেক আগে থেকে। এই পুজো দশ আনা সিংহ পরিবার, ছয় আনা ঘোষ পরিবারের খরচ করে। পুজোর চার দিন নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত লুচি তরকারি ভোগ পরিবারের সকলে খায়। দশমীর দিন রয়েছে দই চিড়ে ভোগ। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, বৈষ্ণব মতে পুজো হওয়ায় সিংহের মুখের আদল ঘোড়ার মতো। প্রাচীন পুজো হওয়ায় মন্দিরের পাশে মেলা বসত। এই বছর তা বন্ধ। দশমীর দিন পুরনো রীতি মেনে বাঁশের মাচা করে বিসর্জন করা হয়। করোনা আবহে সিঁদুর খেলাও বন্ধ বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের সদস্য ইন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘পুরুষ সদস্যরা পুজোর ভোগ রান্না করেন। মহিলারা বাকি পুজোর দ্বায়িত্ব পালন করে থাকেন। অন্য বছর পুজোর এক মাস আগে থেকেই উনুন তৈরি, কাঠ কেনা, মুদিখানা থেকে সকল সামগ্রী আয়োজন করতে কাল ঘাম ছুটে যেতে। এই বছর পুজো পুজোই মনে হচ্ছে না।’’ মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘সমস্ত ব্যস্ততা ফেলে এই পাঁচ দিন গ্রামের বাড়িতে থাকি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দে কাটে। এই বছর অনেক রীতি বাদ পড়েছে।’’