কোতুলপুরে তৃণমূলের সভা। —নিজস্ব চিত্র।
বিধায়ক ‘হাতছাড়া’ হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে শেষ মুহূর্তে কোতুলপুরে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীদের। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, আগামী ৯ নভেম্বর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে সভা করবেন। কিন্তু কোতুলপুরে পাল্টা সভায় গেরুয়া শিবিরে ভাঙন ধরাল তৃণমূল। এলাকার বিধায়ক হরকালী প্রতিহারের পথ ধরে শুক্রবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কোতুলপুরের প্রায় এক হাজার বিজেপি কর্মী। তৃণমূলের দাবি এমনটাই। যদিও ‘যোগদান মেলা’কে নাটক বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
গত ১ নভেম্বর কোতুলপুর বাজারে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দু পদযাত্রা করেন। ওই কর্মসূচির পাল্টা তৃণমূল শুক্রবার একটি সভা করে। সেই সভাতেই এলাকার এক হাজার বিজেপি কর্মী দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দেন বলে দাবি করেছে ঘাসফুল শিবির। দলবদল করা ওই কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায়-সহ দলের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ।
বস্তুত, গত ২৬ নভেম্বর কোতুলপুরের বিধায়ক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে আসার পর তাঁর পথেই হাঁটছেন অনুগামীরা। শুক্রবার কোতুলপুর হাই স্কুল ময়দানে আয়োজিত সভায় তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন বিজেপির কোতুলপুর মণ্ডলের অফিস সেক্রেটারি অনিমেষ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিতে থেকে আমরা কাজ করতে পারছিলাম না। আমাদের বিধায়ক হরকালী প্রতিহার আগেই দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আমরা তাঁর অনুগামী হিসাবে মা-মাটি-মানুষের কাজ করার উদ্দেশে এই দলবদল করলাম।’’ এ নিয়ে বিধায়ক হরকালী বলছেন, ‘‘বিজেপির নেতারা বলেছিলেন, আমি একা দল বদল করেছি। আজ এক হাজার বিজেপি কর্মীকে তৃণমূলে এনে শুধু ট্রেলার দেখালাম। আগামিদিনে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারবেন, আমি বিজেপি দলের আপদ ছিলাম না কি সম্পদ।’’
এই যোগদান নিয়ে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের দলের কর্মীদের সভায় এনে দলীয় পতাকা ধরিয়ে যোগদানের নাটক দেখানো তৃণমূলের সংস্কৃতিরই অঙ্গ। কোতুলপুরে সমস্ত ইটভাটা এবং আলু স্টোরের শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে জোর করে সভায় এনে তাঁদের হাতে দলের পতাকা ধরিয়েছে তৃণমূল। এক জন বিজেপি কর্মীও তৃণমূলে যোগ দেননি। তৃণমূলের এই নাটককে আমরা তীব্র ধিক্কার জানাই।’’