আমোদপুর

স্বামীর মৃত্যু দেখে শোকে আত্মঘাতী স্ত্রী

চোখের সামনে অসুস্থ স্বামীর মৃত্যু দেখে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করলেন শোকস্তব্ধ স্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০০:১৩
Share:

চোখের সামনে অসুস্থ স্বামীর মৃত্যু দেখে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করলেন শোকস্তব্ধ স্ত্রী।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে সাঁইথিয়া থানার আমোদপুর পঞ্চায়েত কার্যালয় লাগোয়া বাবু পাড়ায়। মৃত স্বামীর নাম অপূর্ব কুমার সেন (৬৬), স্ত্রী শিখা সেন (৬০)। পরিবার সূত্রে খবর, অপূর্ববাবু কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত শুক্রবার সেখান থেকে বাড়ি ফেরেন। সোমনাথ সরকার নামে এক কেয়ার টেকার তাঁদের দেখাশোনা করতেন। একমাত্র ছেলে সুব্রত কুমার সেন কর্মসূত্রে দূর্গাপুরে থাকেন। পুলিশ জানায়, শিখাদেবীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিউড়ি পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, আমোদপুর বাবুপাড়ার বাসিন্দা অপূর্ববাবু অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী ছিলেন। বছর কয়েক থেকে হার্টের অসুখে ভুগছিলেন। পরিবার সূত্রে খবর, হার্টের অসুখ ধরা পড়ার পর কলকাতার এক হাসপাতালে তাঁর হার্টের বাইপাস অপারেশন হয়। কিছুটা সুস্থ হলে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তিনি বাড়ি ফেরেন। কেয়ারটেকার সোমনাথ ছাড়াও পাশে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনও থাকতেন।

Advertisement

সোমনাথবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘‘এ দিন রাত্রি তিনটে নাগাদ, অপূর্ববাবু মারা যান। কিছুক্ষন পরে শিখাদেবী কাঁদতে কাঁদতে দোতলায় যান। আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের খবর দিই। এদিকে বেশ কিছুক্ষন কেটে গেলেও শিখাদেবী ওপর থেকে নামছেন না দেখে দেখতে যাই। গিয়ে দেখি ভিতর থেকে দরজা বন্ধ, কোনও সাড়াশব্দ নেই।’’ পড়শিরা দরজা খুলে দেখে, শাড়ির একদিকে শিখাদেবীর গলায় ফাঁস লাগানো আরেক দিকের শাড়ি সিলিং ফ্যানে বাঁধা। ফ্যান সহ শিখাদেবী ঘরের মেঝেয় পড়ে আছেন।

সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘হার্ট অপারেশনের পরেও বাবা কিছুটা সুস্থ হন ঠিকই। কিন্তু নানা ব্যাধি বাবাকে গ্রাস করে বসে। অপারেশনের পর বাবা কিডনী সমস্যায় ভুগছিলেন। ফের ওই হাসপাতালে বাবাকে ভর্তি করি। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় যে বাবার দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। আর কিছু করার নেই! তাঁরা বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।’’ চিকি‌ৎসকরা বলার ২১ দিন পরে গত শুক্রবার বাবাকে বাড়ি নিয়ে আসেন সুব্রতবাবুরা। রবিবার বিশেষ কাজে কর্মস্থলে দূর্গাপুরে যান তিনি। তারপর এ দিন ভোরবেলা সোমনাথ ও আত্মীয়দের মাধ্যমে এই দুঃসংবাদ পান। বলেন, ‘‘বাবা অসুস্থ, যে কোনও সময় মারা যাবেন জানতাম। কিন্তু মা’যে এভাবে চলে যাবেন ভাবতেও পারিনি। মায়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।’’

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে স্বামীর মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েন শিখাদেবী। এবং নিজেকে সামলাতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের পরে দেহটি তাঁর পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু। কোমরসমান জলে দাঁড়িয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। এক দিকের রাস্তা সামলে লাইন পেরিয়ে অন্য দিকে যেতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল ওই যুবকের। জাহাঙ্গির শেখ (২৮) নামে ওই যুবকের বাড়ি বেরেন্দার জয়কৃষ্ণপুরে। গত দু’দিনের বৃষ্টি ও নদীর জল বেড়ে কোমর ছাপানো জল জমেছে ভেদিয়া রেলগেটের কাছে। তার মধ্যেই বর্ধমান ও বোলপুরের দিকের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement