Excise

পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী, ছেলে ধৃত

ঝাড়খণ্ডের চাউলিয়া থেকে চোলাই মদ নিয়ে আসার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন তাঁরা। তখনই দফতরের কর্মীদের উপর চড়াও হওয়া, মারধর করা এবং ঘড়ি, টর্চ, সোনার চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং গাড়িটিতে ভাঙচুর চালানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২২
Share:

সেই গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

চোলাই মদের কারবার চালানো ও আবগারি দফতরের কর্মীদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার স্বামী ও ছেলে সহ চারজন। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রপুর থানা এলাকার সাজিনা গ্রামে। ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি মদের কারবার রোধে বুধবার ওই গ্রামে তল্লাশি চালাতে সদলবলে গিয়েছিলেন সিউড়ি সদরের আবগারি দফতরের আধিকারিক প্রণয়কুমার পাইক। ঝাড়খণ্ডের চাউলিয়া থেকে চোলাই মদ নিয়ে আসার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন তাঁরা। তখনই দফতরের কর্মীদের উপর চড়াও হওয়া, মারধর করা এবং ঘড়ি, টর্চ, সোনার চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং গাড়িটিতে ভাঙচুর চালানো হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আবগারি দফতর থেকে চন্দ্রপুর থানাকে বিষয়টি জানানো হয়। থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে আবগারি দফতরের কর্মী ও আধিকারিকদের উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। উদ্ধার হয়েছে ভাঙচুর হওয়া গাড়িটি।

পুলিশ জানায় ধৃতদের নাম, জয়দের বাগদি, প্রশান্ত বাগদি, অনুপ বাগদি, সৌতম বাগদি। ধৃতদের মধ্যে জয়দেব রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ রেখা বাগদির স্বামী। আর প্রশান্ত তাঁদের ছেলে। বুধবারই চন্দ্রপুর থানা ধৃতদের সিউড়ির এসিজেএম আদালতে তোলে।

Advertisement

এপিপি শুভাশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, আবগারি বিভাগের ওসির অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান, সম্পত্তি নষ্ট করা, সরকারি কর্মীদের মারধর করা এবং চুরি করা সহ একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। এপিপি জানান, সকলের জামিন না মঞ্জুর হয়েছে। ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক। ১৯ তারিখ ফের ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। ১২ নভেম্বরের মধ্যে কেস ডায়েরি পুলিশকে জামা দিতে বলেছে আদালত।

স্থানীয় ও আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় ঝাড়খণ্ড থেকে চোলাই মদ এনে ঢালাও কারবার চলেছিল। সরকার মদের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় চোলাই মদের কারবার আরও বেশি করে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। তাই নিয়মিত তল্লাশি হচ্ছে। এর আগেও মদের কারবারিদের কয়েকটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। বুধবার কর্মাধ্যক্ষের বাড়ির লোক মদের কারবারে যুক্ত থাকার ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেই ক্ষোভকে উসকে দেওয়া হয়েছিল। তারপরই ইট পাটকেল নিয়ে হামলা চালানো হয়।

বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পল্টুপদ ধীবরের অভিযোগ, ‘‘শুধু বেআইনি মদের কারবার চালানোই নয়, শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, মারধর ও গাড়ি ভাঙার ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’

এ ব্যাপারে ওই কর্মাধ্যক্ষের বক্তব্য মেলেনি। তবে তৃণমূল এই ঘটনার পিছনে বিজেপির উস্কানি দেখছে। রাজনগরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সৌমিত্র সিংহের দাবি, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। হামলার নেপথ্যে বিজেপি। ঘটনা দেখতে গিয়ে অকারণ ফেঁসে গিয়েছেন পঞ্চায়েত ভূমি কর্মাধ্যক্ষের স্বামী ও ছেলে।’’ তৃণমূলের এই যুক্তিকে নেহাতই সাফাই দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি নেতাদের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘কারা কী করেছে, সেটা কাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তা থেকেই স্পষ্ট।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement