পনেরো দিনের মধ্যে ঝালদা পুরসভায় অনাস্থা সংক্রান্ত তলবি সভা ডাকতে হবে। বুধবার এই নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিরোধী যে তিন কাউন্সিলর অনাস্থার তলবি সভা ডেকেছিলেন আপাতত তাঁরা সভা ডাকতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ, উপপুরপ্রধানকেই ১৫ দিনের মধ্যে সভা ডাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেসের দখলে ছিল সাতটি, ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে ছিল দু’টি, সিপিএমের দখলে একটি ও নির্দলের দু’টি আসন। গত ১ অগস্ট কংগ্রেসের চারজন, ফব-র একজন ও নির্দলের দুই কাউন্সিলর কলকাতায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ঝালদায় ফিরে ৪ অগস্ট তাঁরা সবাই মিলে কংগ্রেস পুরপ্রধান মধুসূদন কয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থা দাবি করে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, নিয়ম অনুযায়ী এই চিঠি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পুরপ্রধানের অনাস্থা সংক্রান্ত তলবি সভা ডাকার কথা। ১৯ অগস্ট ছিল পুরপ্রধানের তলবি বৈঠক ডাকার সময়সীমা। কিন্তু এই সময় সীমার মধ্যে তিনি বৈঠক না ডাকায় উপপুরপ্রধানের তলবি সভা ডাকার কথা। উপপুরপ্রধান সাত দিনের মধ্যে বৈঠক না ডাকলে তিন কাউন্সিলর মিলে বৈঠক ডাকতে পারেন। কিন্তু সেই বৈঠক ডাকা নিয়ে গোলমালেই বিষয়টি হাইকোর্টে ওঠে।
উপপুরপ্রধান কংগ্রেসের মহেন্দ্রকুমার রুংটা বলেন, ‘‘বিধি মোতাবেক ২০ অগস্ট থেকে ২৬ অগস্টের মধ্যে আমার এই তলবি সভা ডাকার কথা ছিল। আমি ২৪ অগস্ট বৈঠক ডেকেছিলাম। কিন্তু ওই তিন কাউন্সিলর নিজেরাই ৩০ অগস্ট ওই বৈঠকের দিনক্ষণ স্থির করেন। এই কারণে আমি ২৮ অগস্ট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই।’’ এ দিনের ঘোষণার পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি এই বৈঠক ২৬ সেপ্টেম্বর চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত ১৫ দিনের মধ্যে ডাকতে বলেছে।’’
দলত্যাগীদের মধ্যে অন্যতম কাউন্সিলর প্রদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘শুনেছি হাইকোর্ট উপপুরপ্রধানকেই অনাস্থার তলবি বৈঠক ডাকার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা শহরের উন্নয়নের জন্য পুরপ্রধানের অপসারন চাইছি। তলবিসভা হলেই উনি অপসারিত হবেন।’’ তবে ঝালদার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে জুলাই মাসেও অনাস্থা এনেছিলেন অন্য চার কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন কংগ্রেসের এবং ফব-র সদস্য। সেই অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে ইতিপূর্বে হাইকোর্টে গিয়েছেন পুরপ্রধান। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ওই অনাস্থা সংক্রান্ত তলবিসভা ছিল ২ অগস্ট। কিন্তু সেই বৈঠক হয়নি। পুরআইন অনুযায়ী এরপর আগামী ছ’মাস অনাস্থা আনা যাবে না বলা হয়েছে। কিন্তু নতুন করে দলত্যাগীরা ফের অনাস্থা নিয়ে আসায় আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। এরই মধ্যে আদালত তলবিসভা ডাকার নির্দেশ দেওয়ায় আমাকে ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থা হতে হবে।’’
এ প্রসঙ্গেই উপপুরপ্রধান বলছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আগামী পদক্ষেপ আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করব।’’