এত্তা জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র
শুরুটা হয়েছিল বড়দিন থেকে। পেরিয়েছে বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের পালা। মাঝে পাঁচ দিন ধরে চলেছে পর্যটন উৎসব। যার জেরে জয়চণ্ডীপাহাড় কার্যত আঁস্তাকুড়েতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
মঙ্গলবার জয়চণ্ডীপাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, উৎসব প্রাঙ্গণে সত্যজিৎ রায় নামাঙ্কিত মঞ্চের পাশ থেকে শুরু করে পাহাড়ের পাদদেশ, যুব আবাস— সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে খাবারের অবশিষ্টাংশ, চিপসের প্যাকেট, থার্মোকলের বাটি, প্লাস্টিকের প্যাকেট, জলের বোতল ইত্যাদি।
বস্তুত প্রায় প্রতি বছরই পর্যটন মরসুমে জয়চণ্ডীপাহাড়ে আর্বজনার স্তূপ জমে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের। মাঝে কয়েকবার বর্ষবরণের পরে রঘুনাথপুর পুরসভা উদ্যোগী হয়ে আর্বজানা সাফাই করেছিল। কিন্তু এ বছর সে কাজ পুরসভা বা জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসব কমিটি কেউই করেনি বলে অভিযোগ। যে কারণে পাহাড় জুড়ে আর্বজনার স্তূপ তৈরি হয়েছে। তাতে বিরক্ত পর্যটকদের একাংশও।
বাসিন্দাদের একাংশের মতে, বড়দিন থেকে শুরু করে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত পাহাড়ে বেশ কয়েক হাজার পর্যটকের ঢল নামে। এ ছাড়া প্রচুর মানুষ চড়ুইভাতি করতে আসেন। পর্যটন উৎসবের পাঁচ দিনেও বহু লোকের সমাগম হয়। ফলে প্রতিদিনের জমা আর্বজনা পরের দিন সাফাই করে দিলে এই সমস্যা তৈরি হয় না। কিন্তু সে ব্যাপারে পরিকল্পনা নিতে পারেনি পুরসভা বা উৎসব কমিটি। স্থানীয় নন্দুয়াড়ার বাসিন্দা মিলনকুমার মাজি, নন্দদুলাল চক্রবর্তীরা বলেন, ‘‘পর্যটন উৎসবে যে সমস্ত খাবারের দোকান আসে, তাদের আর্বজনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য উৎসব কমিটি নির্দেশ দিতে পারে। তাহলে উৎসব প্রাঙ্গণে আর্বজনা জমত না।’’
পর্যটকেরা জানাচ্ছেন, পাহাড় জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আর্বজনার কারণে দৃশ্য দূষণ হচ্ছে। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা অনুপম নিয়োগী, আনাড়ার অনিন্দিতা চৌধুরীরা বলেন, ‘‘জয়চণ্ডীপাহাড়ের সৌন্দর্যের টানেই পর্যটকেরা বেড়াতে আসেন। কিন্তু পাহাড়ের প্রায় সর্বত্রই যে ভাবে প্লাস্টিকের প্যাকেট থেকে শুরু করে থার্মোকলের বাটি, খাবারের অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে, তাতে পাহাড়ের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে।” সমস্যার সমাধানে পুরসভার উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন বলে মত পর্যটকদের।
তবে উৎসব কমিটির দাবি, উৎসবের পাঁচ দিনে যাতে আর্বজনা না জমে, সে জন্য তাঁরা কিছু পদক্ষেপ করেছিলেন। উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি প্রণব দেওঘরিয়া বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে ৩০টি ডাস্টবিন পাওয়া গিয়েছিল। সে গুলি উৎসবের মাঠে দেওয়া হয়। খাবারের দোকানদারদের ডাস্টবিনেই আর্বজনা ফেলতে বিশেষ ভাবে বলা হয়েছিল। কিন্তু লোকজন সচেতন নয় বলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।” রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান তথা পর্যটন উৎসব কমিটির সম্পাদক তরণী বাউড়ির আশ্বাস, ‘‘পাহাড়ে আর্বজনা জমার সমস্যা নজরে এসেছে। দ্রুত সেখানে পুরসভা সাফাই অভিযান চালাবে।’’