পুরুলিয়া মফস্সলের চাষমোড় এলাকায় যানজট। নিজস্ব চিত্র।
শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবার পুণ্যার্থীদের ঢল নামল চিড়কা গৌরীনাথ ধাম শিব মন্দিরে। ভক্তদের ভিড় ও গাড়ির ভিড়ের মাঝে ব্যাহত হল যান চলাচল। তার জেরে এ দিন সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত যানজটে স্তব্ধ হল পুরুলিয়া মফস্সল থানার চাষ মোড়। সপ্তাহের প্রথম দিনে দুর্ভোগে পড়লেন বহু মানুষ।
সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পুরুলিয়া-ধানবাদ ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে পড়া ট্রাকের লম্বা লাইন গোলবেড়া গ্রামের মোড় পর্যন্ত ছুঁয়ে যায়। শুধু ট্রাক নয়, যাত্রিবাহী প্রচুর ছোট গাড়ি, বাস, ছোট-বড় নানা গাড়িই যানজটে আটকে পড়ে। সমস্যায় পড়েন স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে অফিসের কর্মচারী, শিক্ষক, সাধারণ যাত্রী সকলেই।
কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাষ রোডের মোড়ে চারটি রাস্তা মিশেছে। সোজা রাস্তাটি হল পুরুলিয়া-রাঁচি রোড ভায়া ঝালদা। পুরুলিয়া শহর থেকে রাঁচি যেতে সোজা ওই রাস্তা দিয়েই যেতে হবে। ওই মোড় থেকে ডান পাশে ঘুরলে যাওয়া যাবে ঝাড়খণ্ডের বোকারো, ধানবাদে। আর বাঁ দিকের রাস্তা গিয়েছে চিড়কা গৌরীনাথ ধাম শিব মন্দিরে। কিন্তু এত গুরুত্ব পূর্ণ মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই। অন্য দিনে সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে চলে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু এ দিন পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন না থাকায় ভোগান্তি চরমে উঠে।
এ দিন ওই যানজটে আটকে পড়েছিলেন জয়পুরের একটি স্কুলের শিক্ষক সৌরভ মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় তিরিশ মিনিট গাড়ি আটকে রয়েছে। চাষ রোড থেকে এক কিমি দূরে দাঁড়িয়ে আছি। সময়ে স্কুল ঢুকতে পারব না। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল।’’ ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে যাবেন এমন বেশ কিছু পুণ্যার্থীও দীর্ঘসময় ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুরুলিয়া শহর থেকে ঝালদা, জয়পুর, কোটশিলা ও অন্য দিকে ঝাড়খণ্ডের বাস যানজটে আটকে পড়ে। আটকে পড়ে পুরুলিয়াগামী গাড়ি গুলিও। যানজটে আটকে থাকা অশোক মুর্মু, কমল মাহাতোদের ক্ষোভ, ‘‘যখন আগে থেকেই জানা রয়েছে যে শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিতে এখানে প্রচুর ভিড় হয়, তাহলে যান নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা ও সঠিক পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। তা না হওতেই এই ভোগান্তি।’’
বেলা ১২টার পরে পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘পরের বার থেকে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’