গণঅভিযোগ দিবসে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানালেন বাঁকুড়ার একটি স্কুলের অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র
বাঁকুড়ার স্কুল-ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি তুললেন অভিভাবকদের একাংশ। সোমবার গণঅভিযোগ দিবসে জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস-র কাছে ওই দাবি করেন তাঁরা। তার প্রেক্ষিতে জেলাশাসক এক মাসের মধ্যে জেলার সমস্ত স্কুলে শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠক করার নির্দেশ দিলেন। সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলগুলিতেও ওই বৈঠক যাতে হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সদ্য বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন একটি বেসরকারি স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়ে এক ছাত্র। পরে তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই কয়েকদিন চিকিৎসাধীন অবস্থা থাকার পরে মৃত্যু হয় তার। ওই ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে অভিভাবক মহলে। ইতিমধ্যেই ওই ছাত্রের পরিবারের তরফে বাঁকুড়া সদর থানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ, এক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও মৃত ছাত্রের এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে ওই স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে।
এ দিন ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজন অভিভাবক গণঅভিযোগ বৈঠকে গিয়ে জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস-এর কাছে স্কুলের বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, নিয়মিত ওই স্কুলে শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠক হয় না।
স্কুলের সুরক্ষা ব্যবস্থা ও স্কুল পরিচালন করার ক্ষেত্রেও স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে জেলাশাসকের কাছে নালিশ করেন তাঁরা। স্কুলে কোনও সমস্যার কথা জানাতে গেলে শিক্ষকেরা দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ। এ দিন গণঅভিযোগের বৈঠকে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তেরও দাবি তোলা হয়।
স্কুলের তরফে অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেই স্কুলের তরফে যা যা করার ছিল, সবই তৎপরতার সঙ্গে করা হয়েছে। স্কুলে এসে কেউ কোনও সমস্যার কথা জানালে আমরা অভিভাবকদের মতামত গুরুত্ব দিয়েই শুনি।”
এ দিন অভিভাবকদের কাছে স্কুলের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ শুনেই জেলাশাসক জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের প্রতিনিধিকে নির্দেশ দেন, আগামী এক মাসের মধ্যে জেলার সমস্ত স্কুলেই শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠক করতে হবে। পাশাপাশি মহকুমাশাসকের (বাঁকুড়া সদর) নেতৃত্বে একটি কমিটি ওই ছাত্র-মৃত্যুতে স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির প্রশাসনিক তদন্ত করতে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
জেলাশাসক বলেন, “সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত স্কুলেই নিয়মিত শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বৈঠক হওয়া জরুরি। আগামী এক মাসের মধ্যে জেলার সমস্ত স্কুলেই এই বৈঠক করতে হবে। ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে। প্রশাসনের তরফে ওই স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা পরিকাঠামোগত ও গাফিলতির যে অভিযোগ উঠেছে, তাও খতিয়ে দেখা হবে।”