Rajya Sadak Yojana

রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করায় জোর

মুখ্যমন্ত্রী ‘বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা’র অগ্রগতিতে জোর দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে কী অবস্থায় পুরুলিয়ার ওই প্রকল্প? জেলায় এই প্রকল্পের কাজ দেখভাল করা জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ৭০টি রাস্তা সংস্কারের জন্য এই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

প্রশান্ত পাল 

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১৩
Share:

তোড়জোড়: পুরুলিয়ার জয়পুরের রাগবড় মোড় থেকে বেগুনকোদর যাওয়ার রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। ছবি: সুজিত মাহাতো

আগামী বিধানসভা ভোটের আগে, পুরুলিয়ায় গ্রামীণ পরিকাঠামো বৃদ্ধিকেই পাখির চোখ করছে রাজ্য সরকার। কিছু দিন আগে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বিশেষ করে ‘বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা’ প্রকল্পে রাস্তা নির্মাণে চলতি বছরে জেলার লক্ষ্যমাত্রার প্রসঙ্গ তুলে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, কাজ চলার মাঝেই গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে আরও ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। জেলায় এই প্রকল্পের কাজ দেখভাল করা জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ৭০টি রাস্তা সংস্কারের জন্য এই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।

চলতি বছরে এই প্রকল্পে ১৮টি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ২০০০ সালের পরে, যখন এই রাস্তাগুলি তৈরি হয়েছিল, তখন প্রকল্পের নাম ছিল ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’। পরে, কেন্দ্রের পাশাপাশি, রাজ্য সরকারও অর্থ বরাদ্দ করে বলে বাংলায় এই প্রকল্পের নাম হয়েছে, ‘বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা’।

Advertisement

জেলা পরিষদের প্রধান বাস্তুকার কান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গুরুত্বের নিরিখে জেলার নানা প্রান্তের ১৮টি রাস্তা বেছে নিয়ে সংস্কারের পাশাপাশি, আরও চওড়া করা হচ্ছে। এ ছাড়া, কয়েকদিন আগে রাস্তা সংস্কারে আরও ৪৫ কোটি টাকা মিলেছে। চলতি বছরের মধ্যেই সংস্কারের কাজ করা হবে।’’

বর্তমানে যে সব রাস্তার কাজ চলছে

আনাড়া-পাড়া (হরিহরপুর) (৩.২ কিমি, পাড়া ব্লক)
কুলগোড়া-লিয়া (৬.৯ কিমি, হুড়া ব্লক)
ন’পাড়া-কুঁধুড়কা (৩.৪ কিমি, পুঞ্চা ব্লক)
ঝাঁপড়া-কাশীপুর (৬.২ কিমি, পাড়া ব্লক)
পাড়া-তেঁতুলহিটি (৩.১ কিমি, পাড়া ব্লক)
বিলতোড়া-পশ্চিম বেড়ো, ভায়া পাঁচপাহাড়ি (৪.২ কিমি, রঘুনাথপুর ১ ব্লক)
উনানশিলা-বেড়ো স্টেশন ভায়া মধুতটি (৪.৪৫ কিমি, রঘুনাথপুর ১ ব্লক)
চেলিয়ামা-নবগ্রাম (৯.৭৫ কিমি, রঘুনাথপুর ২ ব্লক)
কেন্দা-কৈড়া (১৬ কিমি, পুঞ্চা ব্লক)
আদ্রা-সোনাইজুড়ি রোড (১০ কিমি, কাশীপুর ব্লক)
জয়পুর-বড়গ্রাম রোড (১০.৫৫ কিমি, জয়পুর ব্লক)
টাটা রোড-আমচুড়িয়া গ্রাম (২.৮ কিমি, পুরুলিয়া ১ ব্লক)
পারবেলিয়া-সরবড়ি পাঞ্চেত রোড, ঝনকা ভায়া শালতোড় (৮.৫৭ কিমি, নিতুড়িয়া ব্লক)
সেনাবনা-কুলটাঁড় (৫.০৫ কিমি, আড়শা ব্লক)
রাখবড়-বেগুনকোদর (৮.৬৫ কিমি, ঝালদা ২ ব্লক)
পুস্তি-জারগো (১২.৫৩ কিমি, ঝালদা ১ ব্লক)
চাঁদুরডি-ভেটি রোড (৮.৫৫ কিমি, সাঁতুড়ি ব্লক)
মালতি-গড়গা (১৯.৭৬ কিমি, বলরামপুর ব্লক)
(প্রথম তিনটি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। তথ্য সূত্র: জেলা পরিষদ)

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা বাস্তুকার ষষ্ঠীচরণ গঁরাইয়ের কথায়, ‘‘চলতি বছরেই জেলায় বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা-২ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। যদিও এই ১৮টি রাস্তা চওড়া করার অনুমোদন মিলেছিল ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে। অর্থ বরাদ্দের পরে, দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় আরও কিছু সময় লেগেছে। কোনও ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বারও দরপত্র আহ্বান করতে হয়েছে। আপাতত, তিনটি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলির কাজ চলছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে এই রাস্তাগুলির কাজই দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

জেলা কন্ট্রাক্টর্স সংগঠনের এক কর্তা শ্রীমন সরকার বলেন, ‘‘১৮টি রাস্তার বেশিরভাগেরই কাজ শুরু হয় ‘লকডাউন’-এর কিছু আগে। কাজ শুরু হতে না হতেই তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ‘লকডাউন’ জারি থাকা অবস্থায় কাজ হয়েছে। কিছুটা আতঙ্কের মধ্যেই কাজ করেছেন শ্রমিকেরা। এর পরে বর্ষা এসে যাওয়ায় পিচের কাজ করা যায়নি।’’

তবে সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে বলে আশ্বাস দেন তিনি। (চলবে)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement