n খোলা বাজার। বিষ্ণুপুরের মাধবগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
সরকারি বাঁধা দর রয়েছে— এক কেজি ৫৯ টাকা। বাঁকুড়ার সুফল বাংলার স্টলগুলিতে ওই দামেই মিলছে পেঁয়াজ। সাতসকালে লাইনে এসে দাঁড়াচ্ছেন একই পরিবারের দাদু-দিদা, ছেলে-বৌমা, নাতি-নাতনি। যতটা সম্ভব রসদ নিয়ে মজুত করা হচ্ছে সংসারে। আর সেই পেঁয়াজে ভর্তুকি বাবদ সরকারের ঘর থেকে গত ষোলো দিনে খরচ হয়েছে ৫ লক্ষেরও বেশি টাকা।
গত ২২ নভেম্বর থেকে সরকারি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরের সুফল বাংলা স্টল থেকে। সুফল বাংলার কর্মকর্তাদের থেকে জানা যাচ্ছে, বাঁকুড়ার স্টল থেকে গড়ে দৈনিক পাঁচ কুইন্টাল ও বিষ্ণুপুরের স্টল থেকে গড়ে দৈনিক এক কুইন্টাল পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম ওই সময় ছিল কেজিতে ৯০ টাকা। সেটা বাড়তে বাড়তে এখন এসে দাঁড়িয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। সুফল বাংলার পরিচালনকারী সংস্থা এখন যেমন পাইকারি বাজার থেকে ১১৩ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনে ৫৪ টাকা ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করছে। বাঁকুড়ার সুফল বাংলা স্টলে ইতিমধ্যেই শুধু ভর্তুকি মূল্য ৪ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিষ্ণুপুরে ভর্তুকি মূল্য ছাড়িয়েছে ১ লক্ষ। রাজ্য অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “সংস্থাগুলি যে ভর্তুকি দিচ্ছে, তার টাকা রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেবে।”
খাতড়া, সোনামুখী বা বড়জোড়ার মতো বিভিন্ন শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন তুলছেন, তাঁরা কেন ভর্তুকির সুবিধা পাবেন না? বাঁকুড়ার মধ্যে শুধু জেলা সদর শহর আর বিষ্ণুপুরে সুফল বাংলার স্টল রয়েছে। এর আগেও আলুর দর বাড়লে বা পেঁয়াজের দর বাড়লে আতান্তরে পড়েছেন গোটা জেলার মানুষ। কিন্তু ভর্তুকির সুবিধা মিলেছে শুধু বড় শহরে। জেলার অন্য এলাকাতেও কেন সুফল বাংলার স্টল খোলা হচ্ছে না, উঠছে সেই প্রশ্ন। শুভাশিসবাবু বলেন, “জেলার বেশ কিছু জায়গায় সুফল বাংলা চালু করার জন্য পরিকাঠামো গড়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
তবে তার আগে এই আকাল সামাল দিতে গণবণ্টন ব্যবস্থা আর স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগাতে চাইছে সরকার। প্রায় ৯০০ রেশন দোকান এবং ৩০০ স্বনির্ভর দলের মাধ্যমে জেলায় জেলায় সরকারি দরে পেঁয়াজ বিক্রি চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে খাদ্য দফতরের সঙ্গে উদ্যানপালন দফতরের সমন্বয় করা হতে পারে বলে খবর। সেটা হয়ে গেলে জেলার অধিকাংশ জায়গার বাসিন্দারাই সরকারি দরের ‘সুফল’ পাবেন বলে আশাবাদী শুভাশিসবাবু।