(বাঁ দিকে) এই গাড়িতেই চলছে ভাঙচুর। (ডান দিকে) তখন চলছে অবরোধ। রবিবার সিউড়ির কড়িধ্যায় রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে তোলা নিজস্ব চিত্র।
তীব্র গতিতে ছুটে আসা পাথর বোঝাই লরি প্রায় পিষেই দিচ্ছিল দুই পড়ুয়াকে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন এলাকাবাসী। ঘণ্টা দু’য়েক পরে সেই অবরোধ তুলেও দেয় পুলিশ। যান চলাচল স্বাভাবিক হতেই ফের বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসে একটি লরি। সেই লরি আটকানোকে ঘিরে বচসার জেরে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লেন ট্রাক, লরি চালক-খালাসিদের একাংশ। ভাঙচুর চলল পুলিশের একটি জিপেও।
রবিবার দুপুরে সিউড়ির কড়িধ্যার কাছে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ওই ঘটনায় পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শেখ নাসিমউদ্দিন, রিপু খান, লাল্টু খান, শেখ নবি নামে দুই চালক এবং দুই খালাসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা প্রত্যেকেই সিউড়ি থানা এলাকার বাসিন্দা।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সিউড়ির বড়বাগান থেকে কড়িধ্যা যাওয়ার সময় বাসিন্দাদের পেরোতে হয় অতি ব্যস্ত রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি সাইকেলে চেপে দুই স্কুল পড়ুয়া কড়িধ্যা থেকে সিউড়ির বড়বাগানে আসছিল। অভিযোগ, সেই সময় একটি পাথর বোঝাই লরি জাতীয় সড়কে থাকা স্পিড ব্রেকার ভেঙে সোজা ওই দুই পড়ুয়ার দিকে ধেয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লরিটি রাস্তার ধারে চলে আসে। নিজেদের বাঁচাতে দুই পড়ুয়াই সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যায়। ওই দুই পড়ুয়ার ধাক্কা লেগেছে মনে করে তখনই এলাকাবাসী ছুটে আসেন। বেপরোয়া যান চলাচলের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধও শুরু করেন।
অবরোধকারীদের মূল দাবি ছিল, নতুন করে স্পিড ব্রেকার বসাতে হবে। পাশাপাশি ব্যস্ত রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়াতে ওই জায়গায় স্থায়ী ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। আগেও পুলিশের কাছে এই দাবি রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। তারা এসে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে। নতুন স্পিড ব্রেকার বসিয়ে ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যে অবরোধ তুলে দেয়। তত ক্ষণে জাতীয় সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগে গিয়েছে। তাই ফেঁসে থাকা গাড়িগুলি অবরোধ উঠতেই জট ছাড়িয়ে এগিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করে। পুলিশের দাবি, ঠিক তখনই নাসিমউদ্দিন নামে এক চালক তার লরিটি ভীষণ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তার পথ আটকায় পুলিশ। ওই লরি আটকাতেই পুলিশের সঙ্গে তীব্র বচসা শুরু হয় চালকের। শুধু নাসিমউদ্দিন নয়, তার সমর্থনে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাতে থাকে অন্য লরি চালক ও খালসিরাও। তাঁদের ক্ষোভ, এত ক্ষণ পরে অবরোধ উঠল, তার পরও কেন পুলিশ পথ আটকাবে। অভিযোগ, এর পরেই পুলিশ ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে চালক-খালাসিদের একাংশ। তখনই পুলিশের গাড়ির কাচ ভাঙে। লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।