বোলপুরের বাহিরি ব্রজ সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই প্রাক্তন ছাত্রের উদ্যোগে আধুনিক প্রযুক্তির ক্লাসরুম।শুক্রবার। ছবিঃ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
ছেলেবেলার স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হলেন স্কুলেরই দুই প্রাক্তন ছাত্র। তাঁদের আর্থিক সাহায্যে বোলপুরের বাহিরি ব্রজসুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় পেল শিক্ষা ও প্রযুক্তির মেলবন্ধনে উন্নতমানের ‘স্মার্ট ক্লাসরুম’। যা গ্রামের স্কুলের পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে মনে করছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। আগামী ১০ জানুয়ারি ওই ‘স্মার্ট’ ক্লাসঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা। প্রাক্তনীদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই।
বাহিরি পাঁচশোয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গ্রাম বাহিরি। সেখানেই রয়েছে বাহিরি ব্রজসুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়। এখন স্কুলটি আগের চেয়ে উন্নত, পরিকাঠামোগত সুবিধাও পুরনো দিনের থেকে বেশি। তবে, স্কুলটিতে সাবেক পদ্ধতিতেই পাঠদান হয়। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার তেমন সুযোগ ছিল না। গত বছর সরস্বতী পুজো দেখতে এসে প্রযুক্তির অভাব অনুভব করেন ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সূর্যনাথ চৌধুরী। স্কুলের পরিচালন সমিতি থেকে শুরু করে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার পরে সূর্যনাথ এবং তাঁর ভাই (তিনিও স্কুলের প্রাক্তনী) চন্দ্রনাথ চৌধুরী মিলে ঠিক করেন, ঠাকুর্দা অবনীনাথ চৌধুরীর স্মৃতির উদ্দেশে তাঁদের ছোটবেলার স্কুলে গড়ে তুলবেন ‘স্মার্ট ক্লাসরুম’।
সেই মতো প্রায় ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে স্কুলের দোতলায় বানানো হয়েছে ওই ক্লাসরুম। সেখানে স্মার্টবোর্ডের মাধ্যমে সমস্ত কিছু পড়ানোর সুযোগ সুবিধা থাকছে। অনলাইনে পড়ুয়াদের ক্লাস করানো, সাউন্ড সিস্টেমও রয়েছে। এক সঙ্গে ১৫০ জন পড়ুয়া বসতে পারবে ক্লাসে। ক্লাসঘরের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অবনীনাথ চৌধুরী মেমোরিয়াল স্মার্ট ক্লাসরুম’। ১০ জানুয়ারি ওই দুই প্রাক্তন ছাত্রের মা সুমিত্রা চৌধুরী ক্লাসঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে উপস্থিত থাকবেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা। স্কুলকে ভালবেসে ওই দুই প্রাক্তনীর এই ভাবে এগিয়ে আসাকে সকলেই কুর্নিশ জানিয়েছেন।
বাহিরি ব্রজসুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিতাভ কোনার বলেন, “ আমাদের স্কুলে এত দিন পর্যন্ত এই ধরনের স্মার্ট ক্লাসরুম ছিল না। যার জন্য বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের হাতেকলমে শেখাতে সমস্যা হত। আমাদেরই দুই প্রাক্তন ছাত্রের উদ্যোগে স্কুলের সেই অভাব পূরণ হতে চলেছে। ওঁদের জন্য আমরা গর্বিত।” সূর্যনাথ চৌধুরীর কথায়, “ছেলেবেলার স্কুলে আধুনিক পরিকাঠামো তেমন ভাবে ছিল না। এই কাজ করতে পেরে আমরাও খুব খুশি। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হবে ভেবেই এই কাজ করা।”