Firhad Hakim

আদিবাসীদের ‘বঞ্চনা’, কেন্দ্রকে তোপ ফিরহাদের

মঙ্গলবার স্বাধীনতা আন্দোলনের শহিদ বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে সিউড়ির সিধো কানহো মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০৪
Share:

সিউড়িতে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে বীরভূমে এসে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুললেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। পড়শি রাজ্যের থেকে দুষ্কৃতী ঢুকিয়ে বিজেপি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবার স্বাধীনতা আন্দোলনের শহিদ বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে সিউড়ির সিধো কানহো মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ। ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, জেলাশাসক বিধান রায়-সহ অন্যরা। এ দিন দুপুরে পৌঁছে ফিরহাদ প্রথমে বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মাল্যদান করেন। এরপর অনুষ্ঠান মঞ্চে যান। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফিরহাদ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন। পাশাপাশি আদিবাসীদের অধিকারের লড়াইয়ে পাশে থাকা ও একত্রিত থাকার বার্তা দেন।

ফিরহাদ বলেন, ‘‘ব্রিটিশ সরকার যখন আদিবাসীদের সব অধিকার কেড়ে নিচ্ছিল সেই সময় বিদ্রোহ করে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আদিবাসীদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন বিরসা মুন্ডা। আজও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে আদিবাসীদের অধিকার হরণ করে বড় বড় কর্পোরেটকে সেই অধিকার দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে আজও হাজারো হাজারো বিরসা মুণ্ডা নিজেদের অধিকারের স্বার্থে আওয়াজ তুলছেন।’’

Advertisement

বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকারকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গেও তুলনা করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘বঞ্চনা বাংলার হচ্ছে, আদিবাসী সমাজের হচ্ছে, সব জায়গায় হচ্ছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ব্রিটিশরা চালিয়েছিল। আর আজকে ভারত সরকার বিভিন্ন কোম্পানিকে সুবিধা দিচ্ছে।’’

রাষ্ট্রপতি পদে একজন আদিবাসী নারী থাকায় তিনি ধন্যবাদও জানান। অনুষ্ঠানে বেশ কিছু আদিবাসী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে টাকার চেক, পাট্টা, আধার কার্ড তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জেলায় বারবার অস্ত্র বোমা উদ্ধার নাম না করে বিজেপির দিকে আঙুল তোলেন মন্ত্রী।

ফিরহাদ বলেন, ‘‘আশ্চর্যজনকভাবে সীমানাবর্তী জেলা বা এলাকাগুলি থেকে অস্ত্রগুলি উদ্ধার হচ্ছে। অর্থাৎ পাশের রাজ্য দিয়ে চক্রান্ত করে অস্ত্রগুলিকে বাংলায় ঢোকানো হচ্ছে। কারণ বাংলার বিরোধী দলের নেতাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই কিছু কিছু সমাজবিরোধী ভাড়া করে বাংলায় রাজনৈতিক দখল পাওয়ার জন্য তাঁরা এই কাজ করছেন। তাঁদের চক্রান্তে টাকা দিয়ে কিছু কিছু জায়গায় বাংলার মানুষও টোপ খাচ্ছেন।’’

ঘটনা হল, সোমবারই সাঁইথিয়ায় বোমাবাজির ঘটনায় এক তৃণমূলকর্মীর পা উড়ে গিয়েছে। শাসক দলের দ্বন্দ্বেই ওই সংঘর্ষ ঘটে বলে অভিযোগ। এ দিন ফিরহাদ অবশ্য বলেন, ‘‘কালকেই খবর পেলাম যে ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে সীমানায় যে নজরদারি ছিল সেটা প্রায় তুলে দিয়েছে। আমি আমাদের পুলিশকে বলেছি যে আপনারা আরও বেশী সীমানায় নজরদারি বাড়ান। আর আমি ফিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলব ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে যাতে সীমানাগুলিকে সিল করা। না হলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিভিন্ন সীমানা দিয়ে অস্ত্র, অপরাধীদের ঢোকাচ্ছে বিরোধী দল। বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা পাল্টা বলেন, ‘‘যখনই আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হন, তখনই ওঁরা বিরোধীদের দিকে আঙুল তোলেন আর ঝাড়খণ্ড তত্ত্ব সামনে নিয়ে আসে। ওঁদের নেতাই বলেছে কোনও এক জেলার নেতার জন্য সাঁইথিয়ার ঘটনা ঘটেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement