মাঠের ঘাস কাটা চলছে। নিজস্ব চিত্র।
ইংরেজি নতুন বছর আসার আগে একেবারে নতুন চেহারায় সবুজ মাঠ পেল পুরুলিয়া। কয়েকবছর আগেও যে মাঠে খেলতে নেমে ধুলোয় নাকাল হতেন খেলোয়াড়েরা, পুরুলিয়া শহরের সেই মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠ সংস্কার করে, ঘাসে ভরিয়ে উপহার দিল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ।
মানভূম ক্রীড়া সংস্থার শতাব্দী প্রাচীন এই মাঠটিই শহরের প্রাণকেন্দ্রে এক মাত্র খেলার মাঠ। কিন্তু সংস্কার ও যত্নের অভাবে মাঠটি দিন-দিন বেহাল হয়ে পড়ছিল। বছর দু’য়েক আগে কন্যাশ্রী ফুটবলের ফাইনালের দিন বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে এত জল জমে যায় যে, সে দিনের মতো খেলা বাতিল করতে হয়েছিল। মানভূম ক্রীড়া সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্ষা বাদ দিলে, বাকি সময়ে এই মাঠে ধুলো উড়ত। নিকাশি ব্যবস্থাও একেবারেই ভাল ছিল না। দক্ষিণ দিকের অনেকখানি জুড়ে জল জমে থাকত। তা ছাড়া ন্যাড়া মাঠে ঘাস না থাকায় ভাল খেলোয়াড়েরাও এখানে খেলতেও চাইতেন না। সে সব সমস্যা কাটল।’’
বিভিন্ন সময়ে প্রাক্তন ক্রীড়াবিদেরা এই মাঠ দেখে নিজেদের হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন। আইএফএ পরিচালিত ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতায় এই মাঠে খেলতে এসে মাঠ নিয়ে অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন জেলার খেলোয়াড় ও কোচেরা। পুরুলিয়ায় এসে কলকাতা ময়দানের প্রাক্তন গোলরক্ষক তনুময় বসু এই মাঠের উপরের অংশের মাটি তুলে ফেলে সংস্কারের পরামর্শ দেন।
মানভূম ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল সাব কমিটির চেয়ারম্যান বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘মাঠটিকে ফের খেলাধুলোর উপযোগী করতে আমূল সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। যা আমাদের সংস্থার পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। তাই আমরা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের কাছে মাঠটির সংস্কারের জন্য অনুরোধ জানাই। পর্ষদ খেলাধুলোর স্বার্থে এই আবেদনে সাড়া দিয়েছে।’’
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক উত্তমকুমার অধিকারী জানান, এই মাঠটি সংস্কারের জন্য পর্ষদ প্রায় এক কোটি ২৩ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। তার মধ্যে মাঠটির আমূল সংস্কার করতে প্রায় এক কোটি ১৬ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ওই টাকায় মাঠের উপরের অংশের মাটি বদল করা, নিকাশি ব্যবস্থার পরিকাঠামো গড়ে তোলা, মেক্সিকান ঘাস লাগানো, গ্যালারির সংস্কার, মাঠের বেড়া তৈরি-সহ বিভিন্ন কাজ করা হয়েছে।
সংস্কার করা মাঠের সূচনা করতে গিয়ে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘জেলায় দীর্ঘদিন ধরে ভাল মাঠের অভাব ছিল। কোনও ভাল দল এখানে খেলতে আসছিল না। ক্রীড়াপ্রেমীরাও দীর্ঘদিন ধরে মাঠটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাই পর্ষদ এ
কাজ করেছে।’’