অন্য বছর এই দিনে অযোধ্যা পাহাড়ের নীচে থিকথিক করত পর্যটকদের বাস। এ বার তুলনায় কম। ছবি: সুজিত মাহাতো।
বড়দিনে ভিড় উপচে পড়ল পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে। তবে রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডী, নিতুড়িয়ার গড়পঞ্চকোট ও সাঁতুড়ির বড়ন্তিতে ভিড় ছিল গত বারের প্রায় অর্ধেক। একেবারেই ভিড় হয়নি বান্দোয়ানের দুয়ারসিনি, পারগেলা জলাধারের মতো পিকনিকের জায়গাগুলিতে। করোনা পরিস্থিতিতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও সর্বত্রই অনেক লোকজন সে সবের তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া ভাবে ঘোরাঘুরি করেছেন। যথেচ্ছ ব্যবহার হয়েছে থার্মোকলের থালা-বাটির। তবে বিক্ষিপ্ত কিছু জায়গা ছাড়া সাউন্ডবক্স বাজেনি।
পুলিশের হিসাবে, শুক্রবার অযোধ্যায় পর্যটক ও পিকনিক দল মিলিয়ে ভিড় হয়েছিল দশ হাজারেরও বেশি মানুষের। সকাল থেকেই সক্রিয় ছিল পুলিশ। প্রায় দেড়শো সিভিক ভলান্টিয়ার ও পঞ্চাশ জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। পাহাড়ে ছিলেন এসডিপিও (ঝালদা) সুব্রত দেব ও বাঘমুণ্ডির ওসি রজত চৌধুরী। এ দিন অযোধ্য়ায় যাওয়া বাঘমুণ্ডির জনার্দন মাহাতো বলেন, ‘‘প্রচুর ভিড় থাকলে খুব কম লোকই মাস্ক পরে ছিল।” তাঁর দাবি, সাউন্ডবক্স এ দিন বাজেনি বললেই চলে।
রঘুনাথপুর মহকুমার অন্যতম পর্যটনস্থল গড়পঞ্চকোটে ভিড় গত বারে তুলনায় অনেক কম ছিল। থার্মোকল ব্য়বহার ও সাউন্ডবক্স বাজানো বন্ধে সক্রিয় ছিলেন স্থানীয় ‘ধারা কল্যাণ সমিতি’র সদস্যেরা। সমিতির সম্পাদক দিলীপকুমার দে বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ে ঢোকার মুখে শালপাতার থালা-বাটি রেখেছিলাম। যাঁরা থার্মোকল নিয়ে এসেছিলেন, তাদের সেগুলি দেওয়া হয়েছে।” কিছু ছোট সাউন্ডবক্স বাজতে শুনে সমিতির সদস্য়রা গিয়ে বুঝিয়ে বন্ধ করান।
গড়পঞ্চকোট ও জয়চণ্ডীতে ছিলেন হাতে গোনা বাইরের পর্যটক। ভিড় ছিল পিকনিক করতে আসা স্থানীয় লোকজনের। বড়ন্তিতে বাইরে থেকে পিকনিক করতে কিছু লোকজন এসেছিলেন। ছিল পুলিশি সহায়তাকেন্দ্র। তবে কাশীপুরের নতুন পর্যটনকেন্দ্র রঞ্জনডির যোগমায়া জলাধারে ভিড় উপচে পড়েছিল। প্রায় একশো গাড়ি গিয়েছিল। মাস্ক ছাড়া ঘুরেছেন অনেকে। ভাল ভিড় হয়েছিল হুড়া ব্লকের ফুটিয়ারি জলাধারে। থার্মোকলের ব্যবহার যথেচ্ছ হয়েছে সেখানে। পুরুলিয়া শহরের অদুরে কংসাবতীর তীরে তেলেডিতেও ভিড় ভালই ছিল। সাউন্ড বক্সের উৎপাতের অভিযোগ মিলেছে।
বান্দোয়ানের দুরায়সিনিতে সারা দিনে হাতে গোনা কিছু লোকজনকে পিকনিক করতে দেখা গিয়েছে। একই ছবি ছিল বান্দোয়ানের পারগেলা জলাধারেও। মানবাজার ১ ব্লকের দোলাডাঙায় কিছু ভিড় হয়েছিল। সেখানকার পরিকাঠামোর অব্যবস্থার অভিযোগ করেছেন অনেকে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, মাস্ক পরানো নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ও পিকনিকের জায়গাগুলিতে তৎপর ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ কর্মীরা।