বাবার সঙ্গে ছেলে। পুরুলিয়া শহরের আশ্রমে। নিজস্ব চিত্র
ছট পুজোর আগে হারানো সন্তানকে ফিরে পেলেন বাবা।
পুরুলিয়া শহরের ভবঘুরেদের একটি আশ্রমই ছিল এত দিন হারানো ছেলের ঠিকানা। ওই আশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বকর্মা পুজোর কয়েকদিন পরে সাঁতুড়ি থানা এলাকা থেকে বছর তেইশের এই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি শুধু জানিয়েছিলেন নিজের নাম— কানাইয়া রাম। কিন্তু ঠিকানা বলতে পারেননি। সেই থেকে ওই আশ্রমেই ছিলেন।
আশ্রমের তরফে স্বাতী শর্মা জানান, যুবকটি হিন্দিভাষি। কিন্তু নাম ছাড়া নিজের সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলতে পারছিলেন না। বেশির ভাগ সময়ে চুপচাপ থাকতেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর সঙ্গে মেশার পরে জানান, বাড়ি বিহারের ছাপরা জেলার দরিয়াপুর গ্রামে। বাবার নামও জানান। তারপরেই যোগাযোগ করা হয় ছাপরা পুলিশের সঙ্গে।
কানাইয়ার বাবা পুনুইয়া রাম বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় পৌঁছে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ ও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কয়েকদিন আগে খবর পাই যে আমার ছেলে পুরুলিয়ার একটি আশ্রমে রয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বোনের সঙ্গে ওর ঝগড়া হয়। বোনকে মারতে দেখে আমি কানাইয়াকে কয়েক ঘা বসিয়ে দিই। তারপরেই কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার হদিশ পাইনি। ওর সামান্য মানসিক সমস্যাও থাকায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।’’
বৃহস্পতিবার রাতে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরার আগে তিনি বলেন, ‘‘ছটের আগে হারানো ছেলেকে ফিরে পেলাম। এর থেকে আনন্দের আর কী রয়েছে?’’ বাবার দিকে চেয়ে কানাইয়া বলে, ‘‘আর পালিয়ে যাব না।’’