অপেক্ষায় চাষিরা। মহম্মদবাজারে কিসান মান্ডিতে। নিজস্ব চিত্র
প্রতিটি ব্লকেই শুরু হয়েছে সরকারি ভাবে ধান কেনার কাজ। সমস্ত কিসান মান্ডিতেই সরকারি ন্যায্য মূল্য ১৮৮৮ টাকা কুইন্টাল দরে ধান নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, ধান কেনার গতি শ্লথ হওয়ায় তাঁদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দাবি মহম্মদবাজারের চাষিদের।
একটাই কাউন্টার রয়েছে যার ফলে তাড়াতাড়ি কাজ হচ্ছে না বলেই দাবি চাষিদের। তাঁদের ক্ষোভ, সকাল থেকে নিজেদের কাজকর্ম ফেলে এখানে এসে ধান বিক্রি করার লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু, কোনও কোনও দিন ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেও ফিরে যেতে হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক ঘোরার পরে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় ধানচাষি সিরাজউদ্দিন, জানকী হাঁসদাদের অভিযোগ, ‘‘এত কিছু করার পরে ধান বিক্রির তারিখ মিলছে অনেক দেরিতে। এত দিন ধরে বাড়িতে ধান রেখে দিতে আমাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’
সোমবার কিসানমান্ডিতে লাইন দিয়েছিলেন ধানচাষি জিয়াউদ্দিন, তপন সরকারেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘সপ্তাহ খানেক ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কোনও রকমে নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। দশ দিন পরে আবার আসতে বলা হয়েছিল। তাই এ দিন এখানে সকাল থেকেই এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ধান বিক্রির তারিখ পাওয়া গিয়েছে আগামী এপ্রিলে।’’ এত দিন কী ভাবে ধান ফেলে রাখব বাড়িতে—প্রশ্ন তপনের।
চাষিরা জানাচ্ছেন, বেশির ভাগের বাড়িতেই জায়গার অভাব। তা ছাড়া, এত মাস ধান ফেলে রাখায় তা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক এক জন চাষির ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ কুইন্টাল ধান রয়েছে। কারও কারও কাছে তার চেয়েও বেশি। ফলে সেই সব ধান গাড়িতে করে কিসান মান্ডিতে নিয়ে এসে বিক্রি করাও খুব কষ্টকর। এই অবস্থায় অনেকে অভাবি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি মূল্য ১৮৮৮ টাকা হলেও বাজারে ১৩২০ টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। এক চাষি বাবন ঘোষাল বলেন, ‘‘কিসান মান্ডিতে যে ভাবে কাজ হচ্ছে এবং এত দেরিতে ধান নেওয়া হচ্ছে, যে জমির এত ধান বাড়িতে রাখাটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে আমাকে খোলাবাজারেই ধান বিক্রি করতে হয়েছে। দাম অনেকটাই কম পেয়েছি। কিন্তু, ফেলে রাখলে পুরো ধানই হয়তো নষ্ট হয়ে যেত।’’
বিডিও (মহম্মদবাজার) অর্ঘ্য গুহ বলেন, ‘‘চাষিদের এই সমস্যার কথা আমি শুনেছি। সমাধানের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাব।’’