দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
খামারে ঢুকে ধান খাওয়া থেকে শুরু করে খেত দাপিয়ে খুরের আঘাতে আনাজ নষ্ট করা। ‘মালিকবিহীন’ ছ’টি ঘোড়ার এমন দৌরাত্ম্যে রাতের ঘুম উড়েছে দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রামে পঞ্চায়েত এলাকার চার, পাঁচটি গ্রামের চাষির। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বিপাকে শালনদীর ধার ঘেঁষা মেজে, বেলসাড়া, বনকাটি, কুলেকুঁড়ি, শল্যাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দারা। গৃহপালিত পশুর তকমা সাঁটা ঘোড়াগুলির ‘অত্যাচার’ থেকে মুক্ত পেতে মৌখিক ভাবে দুবরাজপুরের বিডিওকে জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। সঙ্গে গণসাক্ষরিত আবেদন দুবরাজপুর থানা এবং বিডিওকে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। সেখানে সই করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে আগয়া কাপাসতোড় নামে দুটি গ্রাম। ওই দুটি গ্রামের কোনও বাসিন্দা ঘোড়াগুলি নিয়ে এসেছেন বছর কয়েক আগে। ইতিমধ্যেই সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। বর্যাকালে ওই এলাকায় গেলেই দেখা যাবে ‘দিক দড়ি’ দিয়া বাঁধা থাকে ঘোড়াগুলি। ধান উঠতেই ঘোড়াগুলিকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বছর দুই ধরে। আর সমস্যা বাড়ছে চাষিদের। এই সময়টায় সারাদিন রাত এই গ্রামগুলিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ক্ষতি বেশি হচ্ছে রাতে। যা খাচ্ছে তার থেকে খুরের আঘাতে নষ্ট করছে বেশি।
মেজে গ্রামের চাষি স্বপন মণ্ডল, হৈম মণ্ডল, বেলসাড়া গ্রামের লালু দাস, কুলেকুঁড়ির গ্রামের খগেন পাল বনকাটিগ্রামের স্বপন ঘোষরা বলছেন, ‘‘দুবরাজপুরের এই অঞ্চলে আনাজ চাষ হয় খুব ভাল। এখন খেতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালং, সর্ষে, পেঁয়াজ চারা, আলু, সব তছনচ করে দিচ্ছে। রাত জেগেও আটকানো যাচ্ছে না। খামারে ঢুকে ধান খেয়ে নিচ্ছে। ঘোড়ার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তাঁর নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।’’
এলাকাবাসীর আক্ষেপ গরু, ছাগল হলে ধরে রাখা যায়। কিন্তু, ঘোড়ার সঙ্গে দৌড়ে পারা যাচ্ছে না। ফসলের ক্ষতিতে চোখে জল আসছে। এলাকাবাসীর দাবির সঙ্গে সহমত প্রাক্তন প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অর্জুন সাহাও। বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মুনমুন ঘোষ বলেন, ‘‘বন দফতর বলেছে এটা ওদের এক্তিয়ার ভুক্ত নয়। আগের বারও অনেক ফসল নষ্ট করেছিল। দ্রুত ব্যবস্থা না করতে পারলে আরও ক্ষতি হবে।’’ দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় জানিয়েছেন, জেনে ব্যবস্থা নেবেন।