Irrigation problem

পাম্প থাকলেও সেচের জল নেই, ক্ষোভ

নদীর জল সেচের কাজে লাগানোর প্রকল্প ‘রিভার লিফট ইরিগেশন’ বা ‘আরএলআই’। এতে নদীর মধ্যেই বড় পুকুরের মতো গর্ত খ‌োঁড়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৭
Share:

শুকনো: এ ভাবেই পড়ে রয়েছে পাইপ। বান্দোয়ানের কুইলাপাল গ্রামের কাছে। নিজস্ব চিত্র

বিকল পাম্প বদলানো হয়েছে। কিন্তু বেহাল পাইপলাইন সারানো হয়নি। বান্দোয়ান ব্লকের কুইলাপাল গ্রামের অদূরে জল বিভাজিকা প্রকল্প থেকে কোনও সুবিধাই গত বছর পনেরো ধরে তাঁরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় চাষিদের। এমন সমস্যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জেলার অন্য এলাকাতেও। পুরুলিয়ার জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘নদীর জল উত্তোলন প্রকল্প সারা জেলা জুড়েই বেহাল অবস্থায় রয়েছে। জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠন হয়ে গেলেই আমরা গুরত্ব সহকারে সেই সব কাজে নামব।’’ তবে তিনি মানছেন, ‘‘এই জেলায় ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প খুব জরুরি।’’

Advertisement

নদীর জল সেচের কাজে লাগানোর প্রকল্প ‘রিভার লিফট ইরিগেশন’ বা ‘আরএলআই’। এতে নদীর মধ্যেই বড় পুকুরের মতো গর্ত খ‌োঁড়া হয়। তাতে জল জমে থাকে। পাম্পে সেই জল তুলে সারা বছর আশপাশের জমিতে সেচের বন্দোবস্ত হয়। কুইলাপালের ওই সমস্ত এলাকায় একটা সময়ে চাষবাস বিশেষ হত না বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১৯৭৮ সালে যমুনা নদীর উপরে কুইলাপাল গ্রামের অদূরে জল বিভাজিকা প্রকল্পে ডিজ়েল পাম্প বসানো হয়।

সেই পাম্প গত পনেরো বছর আগে খারাপ হয়ে পড়েছিল। প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে বদল করে বৈদ্যুতিক পাম্প বসানো হয়। কিন্তু পাইপলাইন আর সারাই হয়নি। ফলে, সেচের জল পাচ্ছেন না স্থানীয় চাষিরা। বিডিও (বান্দোয়ান) শুভঙ্কর দাস জানান, গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছেন। সেই অভিযোগ পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে।

Advertisement

কুইলাপাল গ্রামের বাসিন্দা মনসারাম মান্ডি, কানাই মণ্ডলরা জানিয়েছেন, এক সময়ে ওই পাম্পের জলে ধান ছাড়া, প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে রবিশস্য চাষ হত। ধবাগোড়া, খেড়িয়াডি, বড়কোলা গ্রামের বাসিন্দারাও সেই জল পেতেন। এলাকার চাষি কিঙ্কর গড়াই, প্রভাস মণ্ডলরা বলেন, ‘‘এই বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই। পাইপ লাইন ভাল থাকলে অনেক আগেই চাষ শুরু হত।’’ পাম্প থেকেও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে আক্ষেপ তাঁদের।

কুইলাপালের মতো অবস্থা হয়ে রয়েছে অন্য জায়গাতেও। মানবাজার ২ ব্লকের ফুলবেড়িয়া সেতুর কাছে ‘আরএলআই’ প্রকল্প বেহাল হয়ে পড়ে আছে। বিকল হয়ে রয়েছে বরাবাজার ব্লকের সিঁদরি পঞ্চায়েতের শিমুলডাঙা গ্রামের কাছে কুমারী নদীর প্রকল্প, বিশকুদরা গ্রামের কাছে জোড়ের জল থেকে সেচ দেওয়ার প্রকল্প। কবে জেলা পরিষদে স্থায়ী সমিতি গড়া হয়, কবে লাল ফিতের ফাঁস থেকে মুক্তি পায় সেচের জল, সে দিকেই এখন তাকিয়ে পুরুলিয়ার নদীর পাড়ের ওই সব গ্রামের চাষিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement