প্রতীকী ছবি
ঢ্যাঁড়স খেতে ঢুকে পড়েছিল গরু। ফসল খেয়ে নিয়েছিল বলে গরুর পা ও সিং ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ঢ্যাঁড়স চাষির বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে চড়াও হয় গরুর মালিকেরা। শুরু হয় লাঠালাঠি। পুলিশ জানিয়েছে, লাঠির ঘায়ে মৃত্যু হয়েছে ঢ্যাঁড়শ চাষি আলমগীর শেখের (৪০)। জখম হয়েছেন দু’পক্ষের মোট ছ’জন।
রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে, মুরারইয়ের চাতরা পঞ্চায়েত এলাকায় কপিলশহর গ্রামে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আলমগীর ও তাঁর প্রতিবেশী লুসিকা বিবির পরিবারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে প্রায়ই অশান্তি হত। এ দিন লুসিকাদেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আলমগীর তাঁদের পালিত একটি গরুকে বেধড়ক মেরে পা এবং শিং ভেঙে দিয়েছেন। আলমগীরের ভাই আমিরুল পাল্টা দাবি করেন, তাঁর দাদার ঢ্যাঁড়স খেতে গরু ঢুকিয়ে ফসল নষ্ট করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন, এই নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হতেই লাঠি নিয়ে দু’পক্ষ রে-রে করে তেড়ে যান পরস্পরের দিকে। আলমগীরের মাথায় লাঠির আঘাত লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আমিরুল তাঁকে বাঁচাতে গেলে তিনিও গুরুতর জখম হন। তাঁদের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা আলমগীরকে মৃত বলে জানান। বাকি আহতদের মধ্যে তিনজনকে মুরারই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। জখম গরুটিরও চিকিৎসা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে ঘটনা ঘটলেও রাত পর্যন্ত খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়নি মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্তকারীরা এলাকার লোকজন ও উভয় পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। খুন নাকি অনিচ্ছাকৃত খুন তা খতিয়ে দেখে মামলা দায়ের করা হবে।’’ যদিও লুসিকা বিবির দাবি, ‘‘আমাদের গরু আলমগীরের জমির ফসল খেয়েছে বল ওরা জানিয়েছে। তা বলে অবলা প্রাণীটাকে মেরে সিং ও পা ভেঙে দেবে? আমরা আলমগীরের কাছে গরুর চিকিৎসার জন্য টাকা দাবি করলে আমাদেরকে লাঠি, শাবল নিয়ে আক্রমন করেছিল।
আমরা মারিনি।’’ লুসিকা বিবির দাবি ভিত্তিহীন বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের ভাই আমিরুল শেখ। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘আমাদের উপরেই প্রথমে গরুর মালিকরা লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয়েছিল। আমার দাদাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি ওদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। লিখিত অভিযোগও করা হবে।’’
পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।