পাতা, বীজ দিয়ে গয়না তৈরিতে ব্যস্ত (বাঁ দিক থেকে) সুমতি মুর্মু ও পৌলিনা মান্ডি। শান্তিনিকেতনের ফুলডাঙায়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
কানের দুল, গলার হার থেকে শুরু করে হাতের বালা, লকেটের মতো নানা গয়না ছড়িয়ে রয়েছে বাড়ির আনাচেকানাচে। তবে সেগুলি সোনা বা রুপোর নয়। সবটাই তৈরি তালপাতা, খেজুর পাতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গাছের বীজ দিয়ে। তবে এর কদর রয়েছে দেশ, বিদেশে। এমনই পাতার গয়না তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শান্তিনিকেতনের ফুলডাঙার বাসিন্দা সুমতি মুর্মু ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা । এই গয়না বিক্রি করে তাঁরা পুজোয় ভালই লাভের মুখ দেখছেন বলেও দাবি।
সুমতি জানান, সারা বছর বেচাকেনা হলেও পুজোর সময় এই গয়নার চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। সুমতির মা খুব ছোটবেলায় মারা যান। বাবার কাছেই তিনি মানুষ হন। কয়েক বছর আগে বাবাও মারা যান। এর পরে পরিবারের বাকি সদস্যদের কাছেই তাঁর বড় হয়ে ওঠা। পড়াশোনা করতে করতেই পারিবারিক সূত্রেই এই কাজ শুরু করেন সুমতি। নিজেই বিভিন্ন গাছের পাতা সংগ্রহ করে গয়না তৈরির কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি যুক্ত হন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গেও। হাতের তৈরি সেই গয়না সোনাঝুরির হাটে বিক্রি করে কোনও রকমে চলে যেত সুমতির সংসার। বিয়ে হওয়ার পরে সুমতির স্বামী আশুতোষ কিস্কুও তাঁর সঙ্গে এ কাজে হাত লাগান। স্বামী স্ত্রীর পাশাপাশি দিদি, বোন-সহ পরিবারের বাকি সদস্যেরাও
এই কাজ করে থাকেন। এই কাজ তাঁদের আর্থিক স্বনির্ভরতার পথ দেখাচ্ছে। বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে এই ধরনের জিনিসের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি সুমতিরা বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের স্টল দিয়েও এই গয়না বিক্রি করেন। এমনকি, তাঁর তৈরি গয়না বিদেশেও পাড়ি দিতে শুরু করেছে বলে জানান সুমতি।
এ বছরও পুজো মণ্ডপের স্টল দেওয়ার কথা সুমতিদের। সুমতি বলেন, ‘‘অনেক ছোটবেলা থেকেই এ কাজের সঙ্গে যুক্ত। ১১ বছর হয়ে গেল। আজ এই কাজ করে মাসে অন্তত ১০-১২ হাজার টাকা আয় হয়। দুর্গাপুজো ও ইদের সময় চাহিদা ভাল থাকায় আয়ও বাড়ে।’’