প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো পুর-কর্তা দেবাঞ্জন দেব গ্রেফতারের পর থেকে রাজ্যে এক-এক করে নানা ভুয়ো অফিসারের পর্দা ফাঁস হচ্ছে। এ বার ভুয়ো সেনা জওয়ানের হদিস মিলল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। তবে বান্ধবীকে প্রভাবিত করতেই সে এমনটা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার ওই তরুণের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেনাবাহিনীর জওয়ানের দু’টি ভুয়ো পরিচয়পত্র, সেনার উর্দি ও ‘আর্মি’ স্টিকার সাঁটানো একটি মোটরবাইক। বান্ধবীর দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ১৭ বছরের ওই তরুণকে আটক করে পুলিশ। ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বিষ্ণুপুরের স্টেশন রোডের একটি ফটোর দোকানের মালিক প্রসেনজিৎ মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করে। বুধবার তাঁকে বিষ্ণুপুরে আদালতে তোলা হবে। সেনা জওয়ানের উর্দি ওই তরুণ কোথা থেকে পেল, তা জানার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “এ দিন সকালে আমাদের কাছে খবর আসে, ১৭ বছরের একটি ছেলে সেনা জওয়ানের পোশাক পরে আর্মি স্টিকার লাগানো একটি মোটরবাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে। খবর পেয়েই তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, একটি মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। মেয়েটিকে প্রভাবিত করতে সে এটা করেছে। সে জন্য ভুয়ো পরিচয়পত্র সে তৈরি করেছে। এটা আইনত অপরাধ। বান্ধবীর দাদাকেও সে ওই রকম পরিচয়পত্র তৈরি করে দিয়েছিল। যিনি ওই ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ২০১৫ সালের জুভেনাইল অ্যাক্ট অনুযায়ী, ১৮ বছরের নীচে কোনও অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে না। তাকে আটক করা হয়। জুভেনাইল কোর্টে হাজির করানো হয়। তাই ওই তরুণকে গ্রেফতার করা হয়নি। তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন ওই তরুণীর দাদা বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে জানানো হয়েছে, ওই তরুণ তার বান্ধবীর দাদার জন্য একটি পরিচয়পত্র তৈরি করিয়ে তাঁকে দেখায়। জানিয়েছিল, এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা সেনা অফিসে জমা করলেই সে ওই পরিচয়পত্র তাঁকে দিতে পারবে। টাকাটা সে নিজেই দিয়ে দেবে বলে জানিয়েছিল। পুলিশের ধারণা, সব কিছুই ওই তরুণী ও তাঁর পরিবারকে প্রভাবিত করতেই ওই তরুণ করেছিল। কিন্তু পরিচয়পত্র নিয়ে ওই তরুণীর দাদার সন্দেহ তৈরি হয় পরে। তার পরেই তিনি পুলিশের অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
যদিও ওই তরুণের বাবার দাবি, ‘‘আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। সে এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়।” তরুণীর বাবা দাবি করেন, ‘‘মেয়ের বন্ধু হিসেবে ছেলেটি আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করেছিল। আমাদের জানিয়েছি, সেনাবাহিনীর চাকরি পেয়েছে। তমলুকে পোস্টিং হয়েছে। ওর হাবভাব দেখে তা মিথ্যা বলে মনে হয়নি। আমার মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিল। মেয়ের বয়স কম বলে আমরা আমল দিইনি।’’