তৃণমূল কর্মীর বাড়ির ভিতর থেকে বার করা হচ্ছে পরের পর বেআইনি ওষুধের বাক্স। নিজস্ব চিত্র।
বোলপুরের এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে বেআইনি ওষুধ বাজেয়াপ্ত করল আবগারি দফতর। শুক্রবার সকালে বোলপুর শহরের মকরমপুরের ওই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। যদিও ওই তৃণমূল কর্মীর দাবি, উদ্ধার হওয়া ওষুধ তিনি বিক্রি করতে পারেন। তাঁর কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে।
আবগারি দফতরের দাবি, তাদের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে, পুষ্পেন্দু রায় ওরফে রাজা নামে ওই তৃণমূল কর্মী বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি প্রচুর বেআইনি ওষুধও মজুত করে রেখেছেন। এ দিন দুপুরে আবগারি দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট একলব্য চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ওই দফতর এবং ড্রাগ কন্ট্রোলার বিভাগের আধিকারিকেরা অভিযান চালান।
পুষ্পেন্দুর বাড়ি ও ওষুধের গুদামে যৌথ ভাবে অভিযান চালানো হয়। তাতেই এ দিন ৯০৫ লিটার বেআইনি ওষুধ (অ্যারোমেটিক কার্ডামম টিংচার) উদ্ধার হয়েছে বলে আবগারি দফতরের দাবি। তাদের আরও দাবি, যে ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তাতে ৮০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে। যা ব্যাপক ভাবে নেশার দ্রব্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে সমাজে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুরের বাসিন্দা পুষ্পেন্দুর ওষুধের ব্যবসা রয়েছে। এক সময় তিনি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। অনুব্রতের বাড়িতেও তাঁর আসাযাওয়া ছিল।
এক বছর আগে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের এজেন্সি নিয়ে নতুন ব্যবসা শুরু করেন। আবগারি দফতর সূত্রের দাবি, কিছুদিন আগে ঝাড়খণ্ড থেকে বেশ কিছু ওষুধ কিনে নিয়ে আসেন পুষ্পেন্দু। সেই সব ওষুধ বেআইনি বলে দফতর জানতে পারে। এর পরেই এ দিন হঠাৎ হানা দেওয়া হয় ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে।
আবগারি দফতরের জেলা সুপার বলেন, “বাজেয়াপ্ত হওয়া ওষুধে ৮০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে। ব্যাপক হারে এর অপব্যবহার হচ্ছে। এই ওষুধ মানুষের রোগের উপশম হিসাবে ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু, এটিকে নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করার ফলে এক দিকে সমাজের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই রাজস্ব আদায়েও ফাঁকি পড়ছে। সেই খবর পেয়েই এ দিন যৌথ অভিযান চালানো হয়। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।”
যদিও পুষ্পেন্দুর দাবি, “আমি এক বছরের বেশি ওষুধের ব্যবসা করছি। ড্রাগ কন্ট্রোলারের অনুমতি রয়েছে। আমরা যে এটিকে ওষুধ হিসেবে বিক্রি করতে পারি, আমার কাছে তার বৈধ কাগজপত্রও রয়েছে। কেউ যদি এই ওষুধকে নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করে তা হলে আমাদের কী করার আছে! প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক।”