বাঙালির ১৩ পাবর্নের পয়লা পাবর্ন নববর্ষ। পুরভোটের সময়ে তাই এই দিনটাকে ভোটারদের সঙ্গে পরিচিতি বাড়াতে কাজে লাগালেন পুরুলিয়ার ভোট প্রার্থীরাও। কেউ কেউ ভোট প্রচারে বেড়িয়ে লোকজনকে ‘আমাকে ভোট দিন’ বলার আগে একমুখ হেসে আগে বললেন, ‘শুভ নববর্ষ’। তারপর নিজেকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানালেন। অনেকে আবার বিভিন্ন দোকানে গিয়ে সেখানে আসা ভোটারদের সঙ্গেও জনসংযোগের কাজটি সেরে নিয়েছেন।
এ দিন নিজের এলাকায় রক্তদান শিবিরে সাত সকালেই পৌঁছে যান পুরুলিয়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী তথা বিদায়ী পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে ঘোরেন নিজের এলাকায়। পরে বলেন, ‘‘এ দিন লোকজনের সঙ্গে শুধু শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।’’ ঘুরতে ঘুরতে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের প্রার্থী ময়ূরী নন্দীর সঙ্গে। একদা সতীর্থ ময়ূরীদেবীর সঙ্গে দূর থেকে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেছেন। তারকেশবাবু. বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে। দূর থেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তবে আর কোনও কথা হয়নি।’’ একই ভাবে এ দিন রাস্তায় দেখা হয়েছে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী রূপকুমার সরকারের সঙ্গে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মৌসুমী ঘোষের। দু’জনেই একই ওয়ার্ডে থাকেন। দু’জনেই পরস্পরকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সকালে শহরের উপকন্ঠে শ্মশানকালী মন্দিরে গিয়ে সস্ত্রীক পুজো দিয়েছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী বিভাস দাস। তিনি.বলেন, ‘‘সকালে পুজো দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন জনের বাড়িতে গিয়েছি। মিষ্টিমুখও করতে হয়েছে।’’ নিজেদের পারিবারিক দুর্গা মন্দিরে পুজো দিয়ে শহরের চকবাজারে কালী মন্দির, দুর্গা মন্দির সহ বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিলেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী গৌতম রায়। সেই সঙ্গে পথচলতি লোকজনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি যে এলাকার প্রার্থী হয়েছি, সেই এলাকা ব্যবসা কেন্দ্রিক। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। মিছিলও করেছি। কিন্তু এ দিন দলীয় পতাকা ছাড়াই মিছিল করে মানুষকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।’’
তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিদায়ী কাউন্সিলর নির্দলের প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ও এলাকায় জনসংযোগ সেরেছেন নিজের মতো করেই। তিনি এ দিন ছুটির দিনে সবাইকে বাড়িতে পাওয়া সহজ হবে মনে করে বাড়ি-বাড়ি প্রচারে জোর দিয়েছিলেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মিতা চৌধুরী।
নববর্ষের দিনে গাজন উপলক্ষ শিব মন্দিরে ভক্তাদের দল উপস্থিত হন। শহরের ভাগাবাঁধ পাড়া এলাকায় ভক্তাদের শরবৎ খাওয়ানোর সঙ্গে বাচ্চাদের নববর্ষের মিষ্টিমুখ করিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। সেখানে এ দিন ছিলেন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বিমান সরকার, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বৈদ্যনাথ মণ্ডল প্রমুখ। ঝালদা শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল কর্মকারের বাজারে কাপড়ের দোকান রয়েছে। সকালটা হালখাতা পুজোপাঠে সময় কেটেছে। বিকেলে নিজের দোকানে হালখাতা করাতে আসা ক্রেতাদের মধ্যে তিনি মিষ্টি বিলি করার সঙ্গেই নিজের ভোটাটাও চেয়ে নিয়েছেন।