Durga Puja 2020

আসরে পুলিশ, ব্যারিকেডের তোড়জোড়

পুরুলিয়া জেলায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই প্রতিটি থানা উদ্যোক্তাদের মণ্ডপের সামনে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরির করার নির্দেশ দেয়। বুধবার বেলার দিকে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আদ্রায় যান পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০০:০১
Share:

মণ্ডপের সামনে ব্যারিকেড। নিজস্ব চিত্র।

মণ্ডপ-দর্শন নিয়ে হাইকোর্ট আগের রায় বজায় রেখেছে শোনার পরেই পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া দুই জেলার পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যারিকেড তৈরির তোড়জোড় দেখা গিয়েছে। দুই জেলার পুলিশও আদালতের নির্দেশ যাতে মেনে চলা হয়, সে জন্য পুজো উদ্যোক্তাদের সতর্ক করে দিয়েছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বুধবার নিজেই আদ্রায় কয়েকটি পুজো মণ্ডপের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই প্রতিটি থানা উদ্যোক্তাদের মণ্ডপের সামনে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরির করার নির্দেশ দেয়। বুধবার বেলার দিকে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আদ্রায় যান পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার। বাঙ্গালী সমিতি সর্বজনীন, কমলাস্থান সর্বজনীন ও আপার বেনিয়াসোল সর্বজনীন এই তিনটি মণ্ডপ তিনি ঘুরে দেখেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কথা বলেন উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। বাঙ্গালী সমিতির সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ‘‘পুলিশ বলার পরে মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই মণ্ডপের পাঁচ মিটির দূরত্বে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করে দিয়ে সেখানে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ নিতুড়িয়ার বড় পুজো নিতুড়িয়া-দুবেশ্বরী সর্বজনীনের কর্মকর্তা নবনী চক্রবর্তী জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই তাঁরা ব্যারিকেড তৈরি করেছেন।

এ দিকে, বড় পুজোর জন্য মণ্ডপ থেকে ১০ মিটার দূরে এবং ছোট পুজোর ক্ষেত্রে পাঁচ মিটার দূরে ব্যারিকেড তৈরি করতে গিয়ে কোথাও রাস্তা আটকে যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। তবে দুই জেলার হাতেগোনা কয়েকটি বাদে বড় পুজোর সংখ্যা কম হওয়ায় সেই শঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তার উপরে অধিকাংশ পুজো হয় মাঠে।

Advertisement

তবে বাঁকুড়া শহরের ইঁদারাগড়া হরেশ্বরমেলা সর্বজনীন ও লালবাজার পুজো কমিটির মণ্ডপ রাস্তার কাছেই। হরেশ্বরমেলা সর্বজনীনের সম্পাদক রমেশ মুরারকা বলেন, ‘‘আমাদের এ বার ছোট পুজো হওয়ায় পাঁচ মিটার দূরত্বে ব্যারিকেড গড়লেও চলবে। রাস্তা আরও কিছু দূরে হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছি।”

লালবাজার পুজো কমিটির সম্পাদক পরেশ দাসমোদক বলেন, “রাস্তা থেকে আমাদের মণ্ডপ অন্তত ত্রিশ মিটার দূরে। ফলে ব্যারিকেড গড়তে কোনও সমস্যা নেই।” তাঁরা জানান, ব্যারিকেড তৈরির জন্য বরাত দিয়েছেন।

আদ্রার রঘুনাথপুর রাস্তার পাশেই আপার বেনিয়াসোল সর্বজনীনের পুজো। সেখানকার সম্পাদক বিনয়কুমার মুদি জানান, মণ্ডপের ঠিক বাইরেই পাঁচ মিটার দূরত্বে ব্যারিকেড তৈরি হয়েছে। রাস্তা আটকাচ্ছে না।

পশ্চিম হুড়া সর্বজনীনের সম্পাদক গৌতম কু্ণ্ডু জানান, তাঁদের পুজোর মণ্ডপ পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়কের পাশে। তবে ছোট পুজো বলে পাঁচ মিটার দূরত্বে ব্যারিকেড তৈরি করায় রাস্তায় কোনও সমস্যা হচ্ছে না।

পুরুলিয়া-রাঁচী সড়কের পাশে, ঝালদা শহরের নামোপড়া সর্বজনীনের সম্পাদক অনুপ চোপড়া বলেন, ‘‘বাঁশের ব্যারিকেড ছাড়াও লোহার গ্রিল বসিয়ে দিয়েছি।’’ পুরুলিয়া-বরাকর রাস্তার পাশে রঘুনাথপুরের মুনসেফডাঙা সর্বজনীনের সম্পাদক সাম্যব্রত দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘মন্দিরের পুজো। মণ্ডপও ছোট। ফলে ব্যারিকেডের জন্য রাস্তায় অসুবিধা হচ্ছে না।’’ কিন্তু শঙ্কা থাকছে অন্যত্র। রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকে ঠাকুর দেখতে ভিড় করলে দুর্ঘটনা ঘটবে না তো? পুলিশের দাবি, যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

কিন্তু গ্রামাঞ্চলে পুজো কি সতর্ক?— সন্দিহান বিভিন্ন মহল। বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলের সারেঙ্গা ব্লকের জামবনি সারেসকোল হরিনারায়ণপুর পাঞ্জুনিয়া সর্বজনীনের সম্পাদক মলয়কুমার মোহান্তি, সারেঙ্গা শিবতলা সর্বজনীনের সম্পাদক মমতা দাসেরা বলেন, “আদালতের নির্দেশ পুলিশ আমাদের জানিয়েছে। আমরা সেই মতো ব্যারিকেড করছি। স্বাস্থ্য-বিধি সংক্রান্ত যা-যা নির্দেশিকা রয়েছে, সেগুলিও সব মানা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement