বান্দোয়ানের ধাদকা আঞ্চলিক হাইস্কুলে লাইন। নিজস্ব চিত্র
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির তৃতীয় দিনে পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লকের শিবিরগুলিতে উপচে পড়া ভিড়ের ছবি বজায় রইল। ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘খাদ্যসাথী’, একশো দিনের কাজের প্রকল্প, বার্ধক্য ভাতা-সহ নানা প্রকল্পে আবেদন জানাতে বহু মানুষকে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। তবে কোন প্রকল্পের জন্য কী নথি লাগবে, তা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকার অভাবে ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে।
ঝালদা ১ ব্লকের শিবিরটি হয়েছে মাড়ু-মসিনা পঞ্চায়েতের মাড়ু মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে। দুপুর নাগাদ সেখানে গিয়ে দেখা গেল, কার্যত মেলার চেহারা নিয়েছে ভিড়। অনেকে জানান, শিবিরের খবর পরে পেয়েছেন। অনেকে ধান কাটা শেষ করে দুপুরের পরে, শিবিরে এসেছেন। শিবিরে মূলত ভিড় ছিল ‘স্বাস্থ্যসাথী’ ও ‘খাদ্যসাথী’র কাউন্টারে।
প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে মসিনা গ্রাম থেকে আসা কৈলাস কুমার জানান, শিবিরে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের জন্য আবেদন জমা করার পরে কর্মীরা জানিয়েছেন, আরও কিছু নথি লাগবে। সাত কিলোমিটার পথ উজিয়ে সে নথি এনে কৈলাসবাবু দেখেন, ততক্ষণে লম্বা লাইন পড়েছে। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘কোন প্রকল্পের জন্য কী নথি লাগবে, তা আগাম প্রচার করে দেওয়া হলে, এই সমস্যা হত না।” অনেকে আবার ভিড়ের বহর দেখে বাড়ি ফিরেছেন, এমনও ঘটেছে। মাড়ু গ্রামের বাসিন্দা, বৃদ্ধা রাধিবালা মাহাতো যেমন জানান, লম্বা লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে ফিরে এসেছেন।
যদিও এসডিও (ঝালদা) সুবর্ণ রায় জানান, বিষয়টি তাঁদেরও নজরে এসেছে। প্রতিটি শিবিরেই কোন প্রকল্পের জন্য কী-কী নথি লাগবে, তা স্পষ্ট করে লেখা থাকছে। তার পরেও কারও সমস্যা হলে, তিনি পরের শিবিরে গিয়ে প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। প্রয়োজনমতো প্রচারও চলছে।
বান্দোয়ানের শিবিরেও ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘খাদ্যসাথী’ ও একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কাউন্টারগুলিতেই বেশি ভিড় দেখা গিয়েছে। তবে ধাদকা পঞ্চায়েতের ধাদকা আঞ্চলিক স্কুল চত্বরে চলা শিবিরে আবাস যোজনায় বাড়ি চেয়ে আবেদনের জন্য আলাদা কাউন্টার না থাকায় সমস্যা দেখা দেয়। পরে অন্য কাউন্টারে আবেদন জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ওই প্রকল্পে আবেদন জানানো ধর্মপোড়া গ্রামের সুরুবালি বেসরা বলেন, ‘‘ঘর ভেঙে পড়েছে। পঞ্চায়েতে ঘর চেয়ে আবেদন করলেও লাভ হয়নি। অনেকেই বলছে, শিবিরে আবেদন করলেই ঘর পাওয়া যাবে। তাই এসেছি।’’