প্রতীকী চিত্র।
বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে পুরুলিয়ার সাহেববাঁধে তলিয়ে মৃত্যু হল এক সিআইএস জওয়ানের। পুলিশ জানিয়েছে, সুমন মুখোপাধ্যায় (২৭) নামের ওই যুবকের বাড়ি পুরুলিয়া শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হুচুকপাড়ায়। ঘটনায় মৃতের দুই বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তরাখণ্ডে কর্মরত ওই যুবক গত ১৭ জুলাই ছুটিতে বাড়ি ফিরেছিলেন। এক বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে গত সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ সুমন বাড়ি থেকে বেরোন। সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা তাঁর দুই বন্ধু। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, জন্মদিনের অনুষ্ঠান সেরে মঙ্গলবার ভোর নাগাদ সাহেববাঁধের পাড়ের রাস্তা ধরে তাঁরা ফিরছিলেন। পথে সূর্যমন্দিরের অদূরে বাঁধের একটি ঘাটে স্নান করতে নামেন তাঁরা। সে সময়ে কোনও বিপত্তি ঘটে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। সুমনের দুই বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন প্রাতঃভ্রমণে বেরনো কয়েকজন দুই যুবককে সাহেববাঁধের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। জিজ্ঞাসা করে তাঁরা জানতে পারেন, স্নানে নামার পর থেকে তাঁদের এক বন্ধুর খোঁজ মিলছে না। খবর ছড়িয়ে পড়তেই সুমনের খোঁজ শুরু হয়। পৌঁছয় পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। যান ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস-সহ পুরসভার লোকজনও। পৌঁছন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সুমন যেখানে স্নান করতে নেমেছিলেন, পুরসভার লোকজন সেখানে তল্লাশি শুরু করেন।
বর্ষায় সাহেববাঁধে জল বেশি থাকায় পুরসভার লোকজন বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশি চালিয়েও সুমনের হদিস পাননি। শেষমেষ রঘুনাথপুর থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যদের ডাকা হয়। তাঁরা এসে ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ যুবকের দেহ উদ্ধার করেন। সভাধিপতি বলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরাই বাঁধের জল থেকে দেহটি উদ্ধার করেন। কী ভাবে এ ঘটনা, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।’’
সুমনের কাকা মোতি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রায় মাস চারেক পরে, গত শনিবার ও বাড়ি ফিরেছিল। সোমবার রাতে সে তার বাবাকে ফোনে জানিয়েছিল, তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে। কে জানত আর ফিরবে না!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল, তা রহস্যজনক। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।