লোকারণ্য: মা তারার রথযাত্রা তারাপীঠে। ফাইল চিত্র
অন্য দিনের মা তারা রথের দিন রাজরাজেশ্বরী। রথের দিনে রাজবেশে মা তারা রথে চড়ে বের হন। প্রাচীন প্রথা মেনে এই দিনে রথে চাপিয়ে সেবাইতরা মাতারা কে জনসমক্ষে নিয়ে আসেন। এ বারে সেই ঐতিহ্যবাহী মা তারার রথযাত্রা নিয়েই টানাপড়েন চলছে।
করোনা মোকাবিলায় ভিড় এড়াতে তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য ১৬ মার্চ থেকে বন্ধ। ১৫ জুন পর্যন্ত মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দির কমিটি। ১৫ জুনের পরে মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খোলা হবে কিনা মন্দির কমিটি ১৪ জুন বৈঠকে বসবেন। তারাপীঠ মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় ও সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৪ জুন বৈঠকে ১৫ জুনের পরে মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খোলা হবে কি না আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে মা তারার ঐতিহ্যবাহী রথ বের হবে কি না তাও আলোচনা হবে। রথ বের হলে কীভাবে তা হবে সে ব্যাপারেও আলোচনা হবে।’’
প্রাচীন প্রথা মেনে বিশেষ পুজোর পর মা তারাকে সুসজ্জিত রথে চাপানো হয়। শুধু তাই নয় রথের দিনে মা তারাকেও জিলিপির ভোগ নিবেদন করা হয়। রথে বের করানোর আগে বেনারসি কাপড় পরানো হয় দেবীকে। অপরাজিতা, জবা, রজনীগন্ধা, করবী এই সমস্ত ফুলের বড় বড় মালা দিয়ে সাজানো হয়। মা তারাকে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বের করে মন্দিরের মূল প্রবেশ দ্বারের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা সুসজ্জিত রথে চাপানো হয়। তারামাতা মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ শ্যামল মুখোপাধ্যায়, সেবাইত বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়রা জানালেন, রথে জগন্নাথ সুভদ্রা, বলভদ্রর পরিবর্তে মা তারা থাকেন। সেবাইতদের কথায়, ‘‘রথের দিন মা তারার অঙ্গে কৃষ্ণ কালী রূপ বিরাজ করে।’’
প্রথা মেনে মা তারাকে মূল প্রবেশদ্বার থেকে উত্তরমুখী নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তর মুখে রথে চেপে দ্বারকা সেতু সংলগ্ন রামপুরহাট সাঁইথিয়া রাস্তা ধরে রথ তারাপীঠের তিন মাথা মোড় হয়ে মা তারাকে রথে চাপিয়ে আবারও মন্দিরের মূল প্রবেশ দ্বারে নিয়ে আসা হয়। রথের দড়ি টানার পাশাপাশি মা তারার দর্শন পাবার জন্য দর্শনার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই ভিড় এড়াতেই এ বার রথ নিয়ে টানাপড়েন চলছে। তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘মা তারার রথ বের হবে কি না সেটা তারাপীঠ মন্দির কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমি চাইব করোনা মোকাবিলায় রাস্তায় ভিড় এড়াতে এ বছর মা তারার রথযাত্রা স্থগিত রাখা ভাল।’’