সিউড়ির প্রশাসনিক ভবনে নতুন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ও বিদায়ী জেলা শাসক বিধান রায়। —নিজস্ব চিত্র।
ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় ব্যবস্থায় সরাসরি সভাধিপতির আসনে বসার কারণে কাজল শেখের পুরো পরিস্থিতিটা বুঝতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে দাবি করলেন বিদায়ী জেলাশাসক বিধান রায়। তবে, সময় পেলে সভাধিপতি হিসেবে কাজল যে আরও পরিপূর্ণ হয়ে উঠবেন, মঙ্গলবার জেলা পরিষদ আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনায় তাও জানান জেলাশাসক। এ কথা মেনে নিয়েছেন কাজলও। এর আগে এ দিনই সকালে জেলা প্রশাসন ভবনে এসে বীরভূমের নতুন জেলাশাসক হিসাবে দায়িত্ব নেন পূর্ণেন্দু মাজি।
প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা নিয়ে বৈঠকে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন কাজল। এর পরে জেলাশাসক ও সভাধিপতির সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে নানা চর্চা ছিল। এ দিন প্রশাসক হিসেবে সভাধিপতিকে আরও ‘পরিণত’ হতে হবে বলে, সেই বিষয়েই জেলাশাসক বার্তা দিলেন বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল।
এ দিন জেলা পরিষদ আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনায় বিধান রায় বলেন, “সভাধিপতি সাহেব ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় কখনও সদস্য ছিলেন না, একে বারে সরাসরি সভাধিপতি হিসেবে এসেছেন। আমরা সাধারণত বলি যে, একটা উঁচু অট্টালিকার চার তলা বা পাঁচ তলায় পৌঁছতে গেলে প্রথমে এক তলার সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয়। তা হলে তিন-চার তলায় ওঠাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। কিন্তু ওঁর কাছে সেই অবসর ছিল না। তিনি একেবারেই সেই তিন তলা কিংবা চার তলায় উঠেছেন।’’
পাশাপাশি, বিধানের আশা, ‘‘উনি বোঝার চেষ্টা করছেন। কাজ করার চেষ্টা করছেন। অসম্ভব দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। প্রায় প্রত্যেকটি জায়গায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন। ভীষণ উৎসাহ ওঁর মধ্যে। একটা উৎসাহ আছে কিছু করে দেখানোর। আর একটু সময় নিলে নিশ্চয়ই আরও পরিপূর্ণ উনি হবেন। জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে নিজেকে আরও বেশি মেলে ধরতে পারবেন।”
বিধানের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে কাজল জানিয়েছেন, তিনি ঠিক বলেছেন। কারণ, পরোক্ষ ভাবে একাধিক পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও প্রত্যক্ষ ভাবে তিনি কখনওই এই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন না বলেও কাজল জানান। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনার সঙ্গে জেলা পরিষদ পরিচালনার অনেক ফারাক। তাই আমি প্রতি মুহূর্তেই নতুন করে শিখছি। আমরা নিজেরাই স্বীকার করি আমরা নবাগত। আমি ওঁর কাছেও নিয়মিত শিখেছি। আরও শেখার চেষ্টা করব৷ ওঁর এই বক্তব্যকে আমি সম্মান করি।”
এ দিন সকালে বিদায়ী জেলাশাসক বিধান রায় এবং অন্য অতিরিক্ত জেলাশাসক ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে দফতরে আসেন নতুন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। আধিকারিকদের তরফ থেকে নতুন জেলাশাসককে সংবর্ধিতও করা হয়। জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কৌশিক সিংহ এবং অন্য কর্মাধ্যক্ষদের উপস্থিতিতে বীরভূমের সদ্য প্রাক্তন তথা পূর্ব বর্ধমানের নবনিযুক্ত জেলাশাসককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।