রবিবার বাঁকুড়া শহরের হাঁড়িপাড়ায় গিয়ে আক্রান্তদের পরীক্ষা করেন পুরসভার চিকিৎসক। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজো চলাকালীন বাঁকুড়া শহরে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেকে। পুজো মিটতেই আক্রান্তের সংখ্যা বা়ড়ছে বলে দাবি শহরের বাসিন্দাদের। তাঁদের মতে, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাঁড়িপাড়ায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও বাঁকুড়া পুরসভার পাল্টা দাবি, ওই এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা সাত থেকে আট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের।
রবিবার হাঁড়িপাড়ায় গিয়ে আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকার পানীয় জলের উৎসগুলি থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পুরসভার মেডিক্যাল টিম।
হাঁড়িপা়ড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক জন আক্রান্তকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। তবে সাত জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ-সহ অন্যান্য নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, আক্রান্তদের প্রত্যেকের পেটব্যথা, পাতলা মলত্যাগ ও বমির উপসর্গ রয়েছে। এই একই উপসর্গ নিয়ে এলাকার বাসিন্দা কাজল বাউড়ি নামের এক মহিলা শনিবার মারা গিয়েছেন। যদিও বাঁকুড়া পুরসভার পাল্টা দাবি, ডায়েরিয়ার নয়, অন্য অসুখে মৃত্যু হয়েছে কাজল বাউড়ির।
পানীয় জল থেকেই হাঁড়িপাড়ায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। সুরজ সিংহ নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পুরসভার সরবরাহ করা নলবাহিত জল পানীয় হিসাবে ব্যবহার করি। সেই জল থেকেই ডায়েরিয়া ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা করে এলাকার নলকূপের জলপান করছি। কিন্তু তাতেও ডায়েরিয়া ছড়িয়ে পড়াকে রোখা যায়নি।’’ একই আশঙ্কা করছে পুর প্রশাসন। বাঁকুড়া পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী মিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আক্রান্তদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তাঁদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। পানীয় জলের উৎস থেকেই এই ডায়েরিয়া ছড়িয়ে পড়েছে বলে আমাদের ধারণা।’’ যদিও পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কের কারণ নেই বলে দাবি বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য গৌতম দাসের। তিনি বলেন, “ডায়েরিয়া ছড়িয়ে পড়ার খবর পেতেই মেডিক্যাল টিম নিয়ে আমরা হাঁড়িপাড়ায় হাজির হয়েছি। সমস্ত ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার পানীয় জলের সব উৎস থেকেই নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’