প্রচার চলছে। চলছে চিকিৎসাও। কিন্তু প্রতিনিয়ত জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নুমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু মেলায় উদ্বেগ বাড়ছে বীরভূমেও।
ডেঙ্গি নির্ণয়ের জন্য রক্তপরীক্ষা ‘ম্যাক অ্যালাইজা টেস্টে’র পরিসংখ্যান থেকে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনায় মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু। রামপুরহাট মহকুমার ছবিটা সব থেকে খারাপ। গত দু’-তিন দিনে শুধু খয়রাশোলের বড়রা গ্রামেই পাঁচ জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।
সিউড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার শোভন দে বলছেন, ‘‘এই মুহূর্তে সিউড়ি হাসপাতালে নয় জন রোগী ভর্তি রয়েছেন, যাঁদের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। রোগীদের রক্তের নমুনা যা আসছে, তার ১৫ শতাংশের মতো পজিটিভ হচ্ছে।’’ জেলা হাসপাতালের খবর, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে থেকে পাওয়া রক্তের নমুনায় শুধু মঙ্গলবারই ১৪ জন রোগীর অ্যালাইজা টেস্ট পজিটিভ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার জেলার সমস্ত বিডিও, সভাপতিদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী।
স্বাস্থ্য দফতর সুত্রের খবর, শুধুমাত্র সিউড়ি জেলা হাসপাতালেই ‘ম্যাক অ্যালাইজা টেস্টে’র ব্যবস্থা রয়েছে। একমাত্র এই টেস্ট পজিটিভ হলেই বলা সম্ভব যে রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে। গত ৫ অগস্ট সিউড়ি হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রকিবুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যুর পর থেকেই নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও ওই যুবক হাওড়ার একটি শপিংমলে কাজ করতে করতে অসুস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রোগীদের রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনে আক্রান্তদের সংখ্যাটাই ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। যদিও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘বিচ্ছিন্ন ভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। ডেঙ্গি এড়াতে কী সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন, তা জানা জরুরি। সঙ্গে চিকিৎসাও প্রয়োজন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই।’’
একই আর্জি জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরাও। তাঁদের দাবি, এখনও পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গির যে জীবাণু মিলছে, তা মারাত্মক নয়। শুধুমাত্র ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এবং তেমন উপসর্গ দেখলেই রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। যে ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তদের রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে এবং জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তেমন ঘটনা এখনও ঘটেনি।