কেঠারডাঙায় দীর্ঘদিন সাফ না হওয়ায় মজেছে নর্দমা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
ফাঁকা জায়গায় জল জমলে বা আগাছা জন্মালে তার দায় নিতে হবে জমির মালিককে। সে ক্ষেত্রে পুরসভা নোটিস পাঠিয়ে জমির মালিককে সত্বর জল নিষ্কাশন ও জঙ্গল সাফাইয়ের নির্দেশ দেবে। কাজ না হলে মোটা অঙ্কের জরিমানা ও আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে পুরসভা। শুক্রবার ডেঙ্গি মোকাবিলা নিয়ে বৈঠকে বাঁকুড়া পুরসভাকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য পুর নগরোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব জলি চৌধুরী। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার বলেন, “ফাঁকা জায়গায় জল জমা ও আগাছার জঙ্গল হতে দেওয়া যাবে না। আমরা পরিদর্শন করে এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করছি। ব্যক্তিগত জমি হলে সংশ্লিষ্ট জমির মালিককে, খাস জমি হলে প্রশাসনকে জমির জল নিষ্কাশন বা সাফাইয়ের দায়িত্ব নিতে হবে। নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে কাজ না হলে পদক্ষেপ হবে। বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
এ দিকে, ডেঙ্গি সংক্রমণে রাশ টানা যাচ্ছে না বাঁকুড়া শহরে। শনিবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬১। পুরসভা সূত্রে দাবি, রবিবার আরও ১৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। নতুন আক্রান্তেরা সকলেই শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেঠারডাঙা এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬০।
ডেঙ্গি রুখতে পুরসভা সচেতনতা প্রচারে গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে এ দিন খোদ বাঁকুড়া পুরভবনে চোখে পড়েছে অসচেতনতার ছবি। পুরভবনের গ্যারাজের পিছনে খোলা জায়গায় একাধিক গাড়ির টায়ারে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। পুরভবনের ছাদে খোলা আকাশের নীচে একাধিক ড্রাম-সহ নানা পরিত্যক্ত জিনিসপত্রেও জমে রয়েছে বৃষ্টির পরিষ্কার জল। সেখানেও গিজগিজ করছে মশার ডিম। প্লাস্টিকের জল ট্যাঙ্কে জল জমতে দেখা গিয়েছে বাঁকুড়া আদালত চত্বরেও।
বাদ নেই কেঠারডাঙা এলাকাও। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, আবর্জমা জমে মজেছে নর্দমা। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল রহিম খান, শাবানা বিবি, সেখ শাহিদদের অভিযোগ, “এই নালা পরিষ্কার হয় না। নোংরা জমে থাকায় জল দাঁড়িয়ে থাকে। এলাকার রাস্তা ও ঘরেও ঢুকে পড়ে। মাঝে মাঝে আমরা নিজেরাই নালা পরিষ্কার করি।” কেঠারডাঙা এলাকার বিভিন্ন কলতলা, মাঠ-সহ এলাকার অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাতেও এ দিন জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে।
এ দিন ওই এলাকা পরিদর্শনে যান বাঁকুড়ার উপ-পুরপ্রধান হিরণ চট্টরাজ। হিরণ বলেন, “কেঠারডাঙায় কোথায় কোথায় জল জমছে, তা খতিয়ে দেখছি আমরা। পরিকল্পনামতো জল বার করার ব্যবস্থা করা হবে।”
তবে বাঁকুড়া পুরভবন ও বাঁকুড়া আদালত চত্বরে পরিত্যক্ত পাত্রে জল জমা নিয়ে হিরণের দাবি, “পুরভবন চত্বর বা তার ছাদে কোনও জিনিসপত্রে জল জমছে কি না, তা নিয়মিত নজর রাখা হয়। নির্দিষ্ট দিন অন্তর তা পরিষ্কার করা হয়। আদালত চত্বরে কোথাও জল জমছে কি না, খোঁজ নিচ্ছি।”