Indian Railways

লোকাল নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছেই

নিত্যযাত্রী থেকে দুই শহরের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জনজীবন এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। প্রায় সবই খোলা। শুধু ট্রেনই চলছে না।  ফলে, ছাত্রছাত্রী থেকে অসুস্থ রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন।

Advertisement

তন্ময় দত্ত 

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০৬:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্টেশনে স্টপ নেই দূরপাল্লার ট্রেনের। আট মাস হতে চলল লোকাল ট্রেনও চলছে না। বুধবার থেকে শিয়ালদহ ও হাওড়া ডিভিশন থেকে লোকাল ট্রেন চালু হলেও সেই তালিকায় নাম নেই বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনের। সব মিলিয়ে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে নলহাটি ও মুরারই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মনে। মুরারইয়ে একটি মাত্র এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপ আছে। তাতে কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

বীরভূমের এই দুই তল্লাটের অধিকাংশ মানুষজন কলকাতা থেকে বর্ধমান, আসানসোল, রামপুরহাটে যাতায়াতের জন্য মূলত ট্রেনের উপরেই নির্ভরশীল। নিত্যযাত্রী থেকে দুই শহরের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জনজীবন এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। প্রায় সবই খোলা। শুধু ট্রেনই চলছে না। ফলে, ছাত্রছাত্রী থেকে অসুস্থ রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন। অবিলম্বে লোকাল ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য নলহাটি ব্যবসায়ী সমিতি রেল দফতরে আবেদন করেছে। আবার মুরারইয়ের একটি সংগঠন গণস্বাক্ষর নেওয়া শুরু করেছে।

দুই সংগঠনেরই বক্তব্য, সমস্ত গণপরিবহণ করোনা বিধি মেনে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। শুধু ট্রেনই চলছে না। নলহাটি ও মুরারই— দুই স্টেশনই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ওই দুই অঞ্চলের বাসিন্দাই নন, লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের অনেকই এই দু’টি স্টেশন থেকে ট্রেনে যাতায়াত করেন।

Advertisement

দুই রাজ্যের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রেও ট্রেনের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও এলাকার অনেক ছোট ব্যবসায়ী রামপুরহাট, সাঁইথিয়া থেকে বিভিন্ন সামগ্রী কিনে গ্রামে গ্রামে বিক্রি করতেন। ট্রেন না চলায় তাঁরা সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। তার উপরে, বাস পরিষেবা ঠিক মতো না থাকায় রামপুরহাট ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতেও বিপাকে পড়েছে মানুষজন। গরিবেরা টাকা ধার করে, বাড়ির মুরগি,ছাগল বিক্রি করে গাড়ি ভাড়া করে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন।

নলহাটির ব্যবসায়ী টিঙ্কু সাউ, গৌতম দত্তরা বলেন, ‘‘আর কত দিন এই সমস্যা নিয়ে চলতে হবে? কলকাতা, হওয়াড়ার শহরতালির ট্রেনও চালু হয়ে গেল। তা হলে জেলার মানুষ কেন ট্রেন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন?’’ তাঁরা জানান, রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা ফের লোকাল চালুর আবেদন জানাবেন। তাতে কাজ না হলে বড় ধরনের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।

মুরারই ঐক্য সংগঠনের সদস্য কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘মুরারই থেকে বর্ধমান, কলকাতা যাওয়ার বাস নেই। সরকারি বাসও দীর্ঘ সাত মাস ধরে বন্ধ। ফলে প্রত্যেকদিন হাজার হাজার মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। ক্ষোভ বাড়ছে। রেলের কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে লোকাল ট্রেন চালু করা হোক এবং দূরপাল্লা ট্রেনের স্টপ বাড়ানো হোক।’’

মুরারই ১ ব্লক অফিসের কর্মী নৃপেন দাস জানাচ্ছেন, রোজ তিনি বোলপুর থেকে অফিসে আসছেন। আমার মতোঅনেক কর্মী খুব কষ্ট করে যাতায়াত করছেন। কাকভোরে উঠে বাস ধরে সিউড়ি যেতে হয়। তার পর সিউড়ি থেকে নলহাটি, সেখান থেকে কোনও গাড়ি ধরে মুরারই। অফিস শেষে আবারও একই ভাবে বাড়ি ফিরতে হয়। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা দিন চলে যাচ্ছে যাতায়াতেই। ট্রেন চালু হলে এই ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement