স্বরূপের গ্রামে তৃণমূলে ‘যোগ’ 

কয়েক দিন আগে রামকৃষ্ণপুরে গুলিবিদ্ধ হন স্বরূপবাবু। কলকাতার নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নানুর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

অনুব্রত মণ্ডলের পাশে বসে নানুরের রামকৃষ্ণপুরে গুলিতে নিহত স্বরূপ গড়াইয়ের স্ত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামী তৃণমূলের সমর্থক ছিলেন। বোলপুরে হওয়া ওই সাংবাদিক বৈঠকের তিন দিন পরে নিহতের খুড়তুতো দাদা অনুপ গড়াই অভিযোগ তুললেন, ‘‘বিজেপিকে সমর্থনের জেরেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ভাইকে খুন করেছে।’’

Advertisement

কয়েক দিন আগে রামকৃষ্ণপুরে গুলিবিদ্ধ হন স্বরূপবাবু। কলকাতার নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই সময় স্বরূপবাবুর স্ত্রী চায়নাদেবী নিজেদের বিজেপি সমর্থক বলে দাবি করে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন শাসকদলের দিকে। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান-সহ শাসকদলের ১১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অনুপবাবু।

তার পরেই ওই ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়। শনিবার চায়নাদেবী তৃণমূলের বোলপুর কার্যালয়ে গিয়ে নিজেদের তৃণমূলের সমর্থক হিসেবে দাবি করেন। তৃণমূলের দাবি, তাঁর স্বামীকে খুনে অভিযুক্তেরা কেউ ওই ঘটনায় জড়িত নন বলে পুলিশকে চিঠিও লিখে দেন চায়নাদেবী।

Advertisement

তার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার অনুপবাবু বলেন, ‘‘আমি আমার অবস্থান থেকে সরছি না। আমার ভাইয়ের এক শ্যালক কেরিম খানের অনুগামী। তাঁর মাধ্যমেই হুমকি বা প্রলোভন দেখিয়ে ওরা ভাইয়ের স্ত্রীকে হাত করেছে।’’ চায়নাদেবী এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার বোলপুরের পার্টি অফিসেই বলে দিয়েছি।’’

সোমবার রামকৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে ৩০০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে শাসক দলের তরফে দাবি জানানো হয়। তৃণমূল জানায়, বাসাপাড়ার দলীয় অফিসে তাঁদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন স্বরূপবাবুর খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আব্দুল কেরিম খান। দলবদলের কথা উড়িয়ে বিজেপির নানুর মণ্ডল কমিটির সভাপতি বিনয় ঘোষ দাবি করেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে জানা নেই।’’

তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উড়িয়ে কেরিম খান বলেন, ‘‘রাজনৈতিক আক্রোশে আমাদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছিল বিজেপি। ভুল বুঝতে পেরে নিহত যুবকের স্ত্রী সত্যি কথা সবাইকে জানিয়েছেন।’’ এ নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের মন্তব্. ‘‘কী বলব? দুর্ভাগ্যজনক ছাড়া কিছু বলার নেই।’’

এ দিকে, বুথ কমিটির দুই নেতা-সহ লাভপুরের হাতিয়া ও ঠিবা পঞ্চায়েত এলাকার ৫০০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক তাদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছে। সোমবার লাভপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান। তাঁর দাবি, বিজেপির হাতিয়া বুথ কমিটির সভাপতি শেখ আরাবুল এবং গ্রাম কমিটির সম্পাদক শেখ সিরাজুল-সহ ৫০০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ওই দাবি উড়িয়ে বিজেপির স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের কেউ দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দেননি। তৃণমূল নিজেদের লোকেদেরই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অন্য দলের লোক বলে চালাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement