খয়রাশোলে মিলল তৃণমূল নেতার দেহ

নিহত রেকিব দলের কোনও পদে ছিলেন কিনা, ধন্দ বেড়েছে দুই নেতার কথায়। খয়রাশোলের ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেকিব সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি পদে ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকরতলা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:২৪
Share:

নিহত: শেখ রেকিব। —নিজস্ব চিত্র।

কখনও রাজনৈতিক এলাকা দখল, কখনও বা কয়লা সাম্রাজ্যের দখলদারি। এই দুই কারণে খয়রাশোল ব্লকের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে বোমাবাজি, বিস্ফোরণ, খুন, সংঘর্ষের মতো নানা অপরাধ। শুক্রবার আরও একটি খুনের ঘটনা যুক্ত হল সেই তালিকায়।

Advertisement

এ বার খুন হয়ে গেলেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি শেখ রেকিব ওরফে দুখু (৫১)। খয়রাশোল ব্লকের কাঁকরতলা থানা এলাকার রসা গ্রামের পুকুর পাড় থেকে বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে রেকিবের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে কাঁকরতলা গ্রামেই। রেকিব নিজেও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের একটি মিটিং রয়েছে জানিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ ওই নেতাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল এক জন। নিহতের স্ত্রী হামিদা বিবি বলেন, ‘‘ভোরে থানা থেকে স্বামীর মৃত্যু সংবাদ পাই।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, ধারালো অস্ত্র দিয়ে চোখের কোণে খুঁচিয়ে দেওয়ার মতো একটি দাগ ছাড়া আর কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। নিহতের ছেলে-সহ পরিজনদের দাবি, তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর এলাকা দখলের পরিকল্পনা সফল হচ্ছিল না রেকিব থাকায়। যদিও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি।

নিহত রেকিব দলের কোনও পদে ছিলেন কিনা, ধন্দ বেড়েছে দুই নেতার কথায়। খয়রাশোলের ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেকিব সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি পদে ছিলেন। ভাল মানুষ ছিলেন।’’ অন্য দিকে, জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রেকিব আগে সভাপতি পদে ছিলেন। কিন্তু তিনি এখন ওই পদে ছিলেন না।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, অন্তত খান তিনেক খুন এবং খয়রাশোলের তৃণমূল নেতা দীপক ঘোষের উপরে গুলি চালানোর মতো ঘটনায় অভিযুক্তের তালিকায় নাম ছিল রেকিব ওরফে দুখুর। এ ছাড়া, সম্প্রতি একটি খুনের মামলায় গ্রামের সাত জন যাবজ্জীবন সাজা পাওয়ার ঘটনায় সাক্ষী সবুদ সংগঠিত করায় দুখুর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছিল। বিরোধীদের দাবি, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় এত দিন দুখুকে পুলিশ ধরেনি। তবে, শত্রুর অভাব ছিল না। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজনৈতিক ভাবে যে দল ক্ষমতায় থাকে, খয়রাশোল-কাঁকরতলার অবৈধ কয়লা সাম্রাজের দখল তাদের হাতেই থাকে। পুলিশ সূত্রের খবর, মাঝে সুপ্রিম কোর্ট কোল ব্লক বণ্টন অবৈধ ঘোষণার ফলে বাতিল হয়েছিল খয়েরাশোলের দু’টি খোলামুখ কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন। আগামী দিনে ফের সেখানে খোলামুখ কয়লাখনি খুলতে চলেছে। ওই কয়লার রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে রেষারেষি ছিল কিনা, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement