শেখ জমিউল। নিজস্ব চিত্র
দিনে ছিলেন টিন ভাঙা, কাচ ভাঙা সংগ্রহের ফেরিওয়ালা। রাতে হলেন কোটিপতি। যেমনটা হয় সিনেমায়!
শখ করে কেনা লটারির টিকিট কয়েক ঘণ্টার ফারাকে খয়রাশোলের বুধপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ জমিউল ওরফে রূপচাঁদের জীবন এমনই ঘুরিয়ে দিয়েছে।
খয়রাশোলের লোকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনেই রয়েছে বুধপুর গ্রাম। সেখানেই জমিউলদের টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়ি। স্ত্রী, এক ছেলেমেয়ে, বিধবা মা ও প্রতিবন্ধী বোন নিয়ে অভাবের সংসার। পেশায় ফেরিওয়ালা জমিউল লোকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে পুরানো বই, খাতা, খবরের কাগজ, টিন ভাঙা, কাচ ভাঙা সংগ্রহ করেন। ভোর পাঁচটায় বেরিয়ে বিকেলে বাড়ি ফেরা। উদয়,অস্ত খেটে আয় সাকুল্যে ৩০০ টাকা। ফলে বাড়িতে অভাবের ছাপ স্পষ্ট।
সোমবার গভীর রাতে লটারির টিকিট জেতার খবর আসা ইস্তক খুশির বাঁধ ভেঙেছে পরিবারে। বুধবার গ্রামের প্রতিটি পরিবারে মিষ্টি বিলি করা হয় ওই পরিবারের তরফে। সোমবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে লোকপুর বাজারে অভিজিৎ চৌধুরীর লটারির দোকান থেকে শখ করে টিকিট কেটেছিলেন জমিউল। ফল বের হতে দেখা যায় সেই টিকিটটাই ভাগ্য ফিরিয়ে দিয়েছে। তাঁর গ্রাহকই প্রথম পুরস্কার জিতেছেন, সোমবার রাতে খবরটা জানা মাত্র জমিউলের বাড়ি ছুটে গিয়েছিলেন অভিজিৎ। আচমকা এমন খবরে কিছুক্ষণ কোনও অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেননি ওই যুবক। পরে উচ্ছ্বাসে ভাসে পরিবার। রাতারাতি কোটিপতিকে দেখতে রাতেই ভিড় জমতে শুরু করে বাড়িতে।
এত টাকা কী ভাবে, কোথায় কাজে লাগাবেন তা ভেবে উঠতে পারেননি জমিউল। তবে প্রথম কাজ ছিল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা। তা না হলে টাকা ঢুকবে কোথায়। মঙ্গলবার সকালে রাজনগরে গিয়ে সেই কাজই করেছেন জমিউল। তিনি বলছেন, ‘‘অভাবের সংসারে পাছে ভাগ্য ফেরে তাই মাঝে মধ্যেই টিকিট কাটতাম। কিন্তু, ভাগ্য যে সত্যিই ফিরবে সে স্বপ্নও দেখিনি।’’
জমিউলের স্ত্রী রাফিয়া বিবি বলছেন, ‘‘ছেলেমেয়েগুলোকে মানুষ করতে পারব। উপরওয়ালা মুখ তুলে চেয়েছেন।’’