Cyber crime

ছবি বিকৃত করে সমাজমাধ্যমে ছড়ানোয় উদ্বেগ

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অভিযোগকারীর ছেলেই ফোনের গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে বাবার ডেবিট কার্ড থেকে টাকা খরচ করে যাচ্ছে।

Advertisement

সমীরণ পাণ্ডে

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ০৮:২০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

স্মার্ট ফোনে কৌশলে ছবি বিকৃত করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে পুরুলিয়া জেলায়। এতে পড়ুয়ারা অনেকে জড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

Advertisement

অভিযোগ ১: দুই কলেজ পড়ুয়ার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা। কিন্তু হঠাৎ তরুণী সম্পর্ক রাখতে না চাওয়ায় তাঁর ছবির তলায় কুরুচিকর মন্তব্য যোগ করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওই তরুণ। এই মর্মে অভিযোগ করে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী।

অভিযোগ ২: সম্পর্কে থাকার সময়ে দুই যুবক-যুবতী আদানপ্রদান করেছিলেন ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি। পরে সম্পর্ক ভেঙে যায়। যুবতী পরে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সেই সব ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওই যুবক। যুবতী অবসাদে ভুগছিলেন। পরে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করলে গ্রেফতার হন অভিযুক্ত।

Advertisement

অভিযোগ ৩: ডেবিট কার্ড থেকে টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অভিযোগকারীর ছেলেই ফোনের গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে বাবার ডেবিট কার্ড থেকে টাকা খরচ করে যাচ্ছে।

এ রকম অজস্র উদাহরণ রয়েছে। পুরুলিয়া শহরের সাইবার ক্রাইম থানার এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে এক শ্রেণির মানুষের ছবি ও ভিডিয়ো বিকৃত করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। মাসে গড়ে এ রকম প্রায় ৪৫টি অভিযোগ আসছে। সমাজমাধ্যমে নকল অ্যাকাউন্ট খুলে অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে।

তিনি বলেন, ‘‘আগে অনেকে এমন অভিযোগ জানাতে আসতেন না। এখন অভিযোগ করছেন বলে ব্যবস্থাও নেওয়া যাচ্ছে।’’ তিনি জানান, এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম থানার উদ্যোগে মাঝেমধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হয়।

কিন্তু কেন ঠেকানো যাচ্ছে না এই ধরনের কার্যকলাপ?

পুরুলিয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) চিন্ময় মিত্তল বলেন, ‘‘আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। সমাজমাধ্যমে অচেনা মানুষের বন্ধুত্ব পাতানোর হাতছানি উপেক্ষা করাই ভাল। সব কিছু ছবি ও তথ্য সমাজমাধ্যমে না তুলে ধরাই উচিত।’’

পুরুলিয়ার গোলামারা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উষ্ণীষমণি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক ছেলেমেয়ে মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে স্কুল কামাই করছে। যার ফলে স্কুলছুট বাড়ছে। শ্রেণিকক্ষে ফোন যাতে না নিয়ে আসে সে জন্য মাঝেমধ্যেই ছেলেমেয়েদের সচেতন করি।’’ ঝালদা থানার চেক্যা হাই স্কুলের শিক্ষক বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘‘দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোনের নির্ভরতা ও অনিয়ন্ত্রিত সমাজমাধ্যমের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। কিন্তু সচেতনতা গড়ে উঠছে না।’’

গ্রেফতারের পরেও কেন ছবিটা বদলাচ্ছে না? এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আরও বেশি করে সচেতনতার প্রচারে শিবির করার কথা ভাবছে পুরুলিয়া
সাইবার ক্রাইম থানা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement