Manipur Violence

মণিপুরে নিহত জওয়ানের দেহ ফিরল গ্রামে, চোখের জলে শেষ বিদায় মানুষের, দেওয়া হল গান স্যালুট

শুক্রবার রাতেই অরূপ গুরুতর আহত অবস্থায় ফোনে ঘটনার কথা জানান ভাইকে। শুক্রবার সাতসকালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছয় পাঁচালের বাড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৯
Share:

চোখের জলে শেষ বিদায়। — নিজস্ব চিত্র।

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ছ’টা। আর পাঁচটা দিন বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের বর্ধিষ্ণু গ্রাম পাঁচালের ছোট্ট মাঠটা মোটামুটি ফাঁকাই থাকে। কিন্তু রবিবার সাতসকালে সেই মাঠে তিলধারণের জায়গা নেই। সকাল সাতটা বাজতেই সেখানে ধীর লয়ে প্রবেশ করল সিআরপিএফের কনভয়। জওয়ানদের কাঁধে ভর করে যখন নেমে আসছেন সকলের প্রিয় অরূপ, তখন মাঠ জুড়ে পিন পতনের স্তব্ধতা। চোখে জলের ধারা। সকলেই দেখতে চান মণিপুরে জঙ্গি হানায় নিহত অরূপ সাইনিকে, শেষ বারের মতো।

Advertisement

শুক্রবার গভীর রাতে মণিপুরের বিষ্ণুপুরে নারানসেনায় জঙ্গি হামলায় নিহত হন দুই সিআরপিএফ জওয়ান। এঁদের মধ্যে অরূপের বাড়ি সোনামুখী ব্লকের পাঁচাল গ্রামে। শুক্রবার রাতেই অরূপ গুরুতর আহত অবস্থায় ফোনে ঘটনার কথা জানান ভাইকে। শুক্রবার সাতসকালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছয় পাঁচালের বাড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। জনপ্রিয়, সদাহাস্যময় অরূপের অকাল মৃত্যুর খবর পাঁচাল ও আশপাশের গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। শেষ বারের মতো অরূপকে দেখতে শুরু হয় চোখের জলে প্রতীক্ষার পালা। গ্রামের মাঠে আগে থেকেই তৈরি করা মঞ্চের চার দিকে ভিড় জমতে শুরু করে। শুধু স্থানীয়রাই নন, সাতসকালেই মাঠে হাজির বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি-সহ রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরাও। সকাল সাতটা নাগাদ অরূপের কফিনবন্দি দেহ পৌঁছয় পাঁচাল গ্রামে। জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনে পুষ্পস্তবক দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান সিআরপিএফ, রাজ্য পুলিশের কর্তারা এবং এলাকার মানুষ। এর পর সিআরপিএফ জওয়ানদের কাঁধে ভর করে কফিনবন্দি অরূপ পৌঁছন নিজের বাড়িতে, শেষ বারের মতো। আধ ঘণ্টা সেখানে দেহ রাখার পর নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের শ্মশানে। সেখানে গান স্যালুট দেওয়ার পর জওয়ানের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

শুক্রবার রাতে জঙ্গিদের গুলি এবং বোমায় গুরুতর আহত হওয়ার পর অরূপ ফোন করেছিলেন ছোট ভাই ধনঞ্জয়কে। রবিবার ধনঞ্জয় বলেন, ‘‘মাস খানেক আগে দোলের সময় দাদা বাড়ি এসেছিল। আবার সেপ্টেম্বরে বাড়িতে আসার কথা ছিল। এর মাঝেই শুক্রবার রাতে দাদা আহত হওয়ার পর আমাকে ফোন করে জানায়, পেটে গুলি লেগেছে, পা ভেঙেছে। দাদা বারবার বলছিল, আমি আর বাঁচব না! সে কথা যে এ ভাবে সত্যি হবে, বুঝতে পারিনি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement