প্রতি বুথে ব্রিগেড চায় সিপিএম, জোর জনসংযোগে

৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ সফল করার জন্য শুধুমাত্র প্রচার নয়, জনসংযোগকেই প্রাধান্য দিচ্ছে সিপিএম।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৫
Share:

আহ্বান: ব্রিগেডের প্রচারে দেওয়াল লিখন। দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র

৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ সফল করার জন্য শুধুমাত্র প্রচার নয়, জনসংযোগকেই প্রাধান্য দিচ্ছে সিপিএম। দলীয় সূত্রে খবর— জনসভা, পথসভা, দেওয়াল লিখন, হাতে লেখা পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচার রয়েছেই। তবে সভার উদ্দেশ্য কী, সেটা জানাতে প্রতিটি বুথ এলাকার পার্টি সদস্যদের বাড়িতে বাড়িতে চিঠি দিয়ে সে কথা প্রচার করা হয়েছে, হচ্ছে।

Advertisement

দলের অন্দরমহলের খবর, একের পরে এক নির্বাচন হয়েছে। রাজ্যে ক্রমশ কমেছে সিপিএম তথা বামেদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ।

বিভিন্ন ভাবে শক্তি পুনরুদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিএম। জেলায় কখনও লং মার্চ, কখনও সম্প্রীতি যাত্রা করেছে বামেরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের মতোই এ বার নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি যাচাইয়ের মঞ্চ হিসাবে ব্রিগেডকে বেছেছে সিপিএম। ৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ সফল করার জন্য রাজ্য জুড়ে চেষ্টা চালাচ্ছে দল। মূল স্লোগান— ‘বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও। তৃণমূল হঠাও রাজ্য বাঁচাও।’

Advertisement

বামফ্রন্টের ডাকা সেই ব্রিগেডকে মানুষের ব্রিগেড করার চেষ্টা চলছে বীরভূমেও। জেলা নেতৃত্ব বলছেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে স্পষ্ট বার্তা, প্রতিটি বুথে ব্রিগেড গড়ে কলকাতার ব্রিগেডে আসুন।

লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেলার ৩ হাজার ২১টি বুথের প্রতিটি থেকে কমপক্ষে ৫ জনকে যেতে হবে ব্রিগেড। বলা হয়েছে, এমন কোনও বুথ থাকবে না যেখান থেকে ব্রিগেড সমাবেশে মানুষ যাবেন না। সেই লক্ষ্য ধরেই এগানো হচ্ছে।’’

দলীয় সূত্রে খবর, তিন স্তরে পার্টি সদস্য রয়েছে ৯ হাজারের বেশি। রাজ্য নেতৃত্বের স্পষ্ট বার্তা— তাঁদের কোনও সাম্মানিক পদ দেওয়া হয়নি। মানুষের পাশে থেকে কাজ করার জন্যেই পদ দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যেকেই যাতে ব্রিগেডে আসেন, প্রাথমিক লক্ষ্য সেটাই। কিন্তু না গেলে কৈফিয়ত তলব করার আগে প্রত্যেক সদস্যকে নিয়ম মেনে চিঠি দিয়ে নিমন্ত্রণ করা হচ্ছে। কারও মাধ্যমে বা ডাকযোগে নয়, উপরতলার নেতাদের মাধ্যমে প্রত্যেকের হাতে হাতে সেই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দেখা না পেলে সদস্যদের বাড়িতে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে চিঠি ধরিয়ে দল সম্পর্কে নেতিবাচক ও ইতিবাচক মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বয়স্ক এবং দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ বা বিশেষ কাজে আটকে পড়েছেন এমন সদস্য ছাড়া সকল সদস্যের ব্রিগেড যাওয়া বাধ্যতামূলক।

পার্টি সদস্য নন, প্রতিটি বুথ এলাকার এমন অন্তত ৫০টি বাড়িতে ব্যাচ আকৃতির চিঠি পৌঁছে দিয়েছে সিপিএম। উদ্দেশ্য একটাই, সাধারণ মানুষকে সমাবেশে অংশগ্রহণে আহ্বান জানানোর সঙ্গে ব্রিগেড কর্মসূচির কারণ জানানো। সিপিএম নেতারা বলছেন, ‘‘সাধারণ মানুষ যদি নাও যান, নৈতিক সমর্থন যাতে করেন।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘রাজ্যে ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দু’টি সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বীতশ্রদ্ধ মানুষ। তার প্রতিবাদেই ব্রিগেড। সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, জেলা থেকে যত বেশি সম্ভব লোক নিয়ে যাওয়া। সেটা সফল হবে বলে আশাবাদী আমরা।’’

তবে সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশে জেলা থেকে লোকই যাবেন না বলে কটাক্ষ করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় সিপিএমই হোক বা বিজেপি, কারও কোনও অস্তিত্বই নেই।’’ অন্য দিকে বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলছেন, ‘‘শাসকদলের চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের জায়গায় সিপিএম নয়, এই মুহূর্তে রয়েছি আমরাই। তাই সিপিএমের কর্মসূচি নিয়ে বিশেষ ভাবনা নেই।’’

যদিও জেলা সিপিএম নেতৃত্ব বলছেন— অস্তিত্ব বা চিন্তা রয়েছে কিনা, তা ৩ ফেব্রুয়ারিই স্পষ্ট হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement