Mohammed Salim

পঞ্চায়েতে ভোট লুট রুখতে হবে, দুর্নীতি নিয়ে একই সঙ্গে তৃণমূল ও শুভেন্দুকে তোপ মহম্মদ সেলিমের

এ দিন বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় পেট্রোলপাম্প মোড়ে সিপিএমের মিছিল ও সমাবেশে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতির দাবি, অন্তত ১৫ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫০
Share:

মহম্মদ সেলিম, অমিয় পাত্রদের সঙ্গে সিপিএম কর্মীরা। বাঁকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত ভোটের আগে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এককাট্টা করতে সিপিএম কর্মীদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান দিতে শোনা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের মুখে। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তবে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় দলীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে শুভেন্দুর দিকেও তোপ দাগলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। দলীয় কর্মীদের ভোট লুট রুখে ‘লুটেরা’দের হাত থেকে পঞ্চায়েত কেড়ে নিয়ে আসার বার্তাও দেন তিনি।

Advertisement

সেলিম এ দিন অভিযোগ করেন, “কিসেনজির সঙ্গে শুভেন্দুর কী কথা হয়েছিল, সব রেকর্ড আছে সিআইডির দফতরে। পুলিশ অফিসারেরা জানেন। কে কার বন্দুক চুরি করবে আর কার বুকে লাগাবে, সিপিএমকে খুন করার জন্য মাওবাদীদের কত গুলি দেবে তৃণমূল, এই সব তথ্য আছে। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে পালিয়ে বিজেপিতে যেতে পারেন, কিন্তু আমাদের কমরেডদের বুকে যতগুলি গুলি লেগেছে, তার হিসেব আমরা গুনে গুনে নেব।” তাঁর আরও দাবি, “পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীন সেখানে যা নিয়োগ হয়েছে, যা বাস, ট্রাম কেনা হয়েছে তার ঘুষ, কাটমানি শুভেন্দু অধিকারী নিয়েছেন।”

তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়েও সরব হন সেলিম। তিনি বলেন, “তৃণমূলের আমলে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে দুর্নীতি হয়নি। এখন আমরা শিক্ষা দফতরের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছি। গত ১২ বছরে পুলিশ নিয়োগেও দুর্নীতি হয়েছে। সে তথ্যও আমার কাছে আছে। আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে সেই তথ্য এ বারে কোর্টে দিতে হবে। ২০১২ থেকে রাজ্য সরকারকে আদালত চড় মারছে, তার পরেও এদের হুঁশ ফেরেনি।” সঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুট রোখার জন্য কর্মীদের বার্তা দিয়ে সেলিম বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে ভোট লুট রুখতে হবে। লুটেরাদের হাত থেকে পঞ্চায়েত কেড়ে নিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে পঞ্চায়েত ফিরিয়ে দিতে হবে আমাদের। এটাই হচ্ছে আসল লড়াই।”

Advertisement

পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, “বাঁকুড়ায় আমাদের সভা করতে দিতে চায়নি পুলিশ। আমাদের মিছিলও আটকানোর চেষ্টা করেছিল। তবে এত মানুষের সমাগম দেখে পুলিশের মতি ফিরেছে।” অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা পুলিশ।

এ দিন বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় পেট্রোলপাম্প মোড়ে সিপিএমের মিছিল ও সমাবেশে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতির দাবি, অন্তত ১৫ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল। তিনি বলেন, “স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মানুষ এই কর্মসূচিতে যোগ নিতে এসেছিলেন।” পুলিশের যদিও দাবি, হাজার চারেক মানুষ এসেছিলেন। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্রের আবার দাবি, “সিপিএম একটা ছোট জায়গায় সমাবেশ করেছিল। তাতেও এলাকা ভরেনি। বাম আমলে মানুষ সিপিএমের অত্যাচার এখনও ভোলেননি। ওদের কথার কোনও গুরুত্বই দেন না মানুষ।”

বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০১১ সালে মানুষ সিপিএমের অত্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। এখন মানুষ তৃণমূলের অত্যাচার ও দুর্নীতিতে অতিষ্ট। তাই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডাক দিচ্ছি আমরা। কিন্তু এটা সিপিএম চায় না। ওঁরা তৃণমূলের সুবিধা করে দিতে চাইছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement