ঘরে-তৈরি: পুরুলিয়া শহরের ওল্ড পুলিশ লাইনে। ছবি: সুজিত মাহাতো
কোলাকুলি নেই। জোগান নেই লাচ্ছার। দেখা নেই সুরমা আঁকিয়েদের। করোনা-আবহে সোমবার এ ভাবেই ইদ এল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায়। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খানের কথায়, ‘‘আমার প্রায় সত্তর বছরের জীবনে এমন ইদ এই প্রথম বার পালন করলাম, যে ইদে কোলাকুলি নেই।’’
পুরুলিয়া শহরের বড় মসজিদের ইমাম মহম্মদ জয়নুল আবেদিন জানান, মসজিদে সাত জন নমাজ পড়তে পারবেন বলে অনুমতি মিলেছিল। তাই মানা হয়েছে। ‘পুরুলিয়া জেলা ইমাম ও মোয়াজ্জিন অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মহম্মদ আব্বাস আনসারি বলেন, ‘‘এ বার জমায়েত করা যাবে না বলে ইদগার কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। আগেই সে কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।’’
বাঁকুড়ার বঙ্গবিদ্যালয়ের ইদের নমাজ পড়ার রীতিতে ছেদ পড়েছে এ বছর। এ দিন বঙ্গবিদ্যালয়ের মাঠ ছিল সুনসান। মাচানতলার মসজিদেও ভিড় ছিল না। বাঁকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম বলেন, “করোনা সংক্রমণ এড়াতেই বাড়িতে নামাজ পড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সকলেই তা মেনেছেন।’’
বিষ্ণুপুরে অবশ্য ফাঁকা জায়গায় জমায়েত করে নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখা গিয়েছে। এ দিন ভোরে বিষ্ণুপুরের কুরবানতলা, সত্যপীরতলা, শ্যামসুন্দরপুর এলাকায় নামাজ পড়তে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় ছিল বলে দাবি করেছেন আয়োজকেরা।
পুরুলিয়া শহরের বাজারে ঘুরে ঘুরে লাচ্ছা পাননি বলে জানান শেখ আকবর। শহরের জেলখানা মোড়ে লাচ্ছার দোকান রয়েছে আবদুল সাত্তারেরত। তাঁর কথায়, ‘‘লাচ্ছা তো বাইরে থেকে পুরুলিয়ায় আসে। তেমন বেশ কিছু এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্ণিত। ফলে, আমদানিতে অসুবিধা হচ্ছে।’’ রঘুনাথপুরের বাসিন্দা শেখ নাদিম বলেন, ‘‘ছোঁয়াচ এড়াতে এ বছর আর লাচ্ছা কিনিনি। বাড়িতেই বানিয়েছি।’’
এ ভাবেই কেটে গেল এ বছরের ইদ। পুরুলিয়া জেলা ইমাম ও মোয়াজ্জিন সংগঠনের সম্পাদক মহম্মদ আব্বাস আনসরি বলেন, ‘‘প্রার্থনা করলাম, এই পরিস্থিতি থেকে সবাই যেন দ্রুত মুক্তি পান।’’