স্থানান্তর: মহম্মদবাজারের আনাজ বাজার সরল। ছবি: পাপাই বাগদি
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় বাজারে ভিড় এড়াতে চারটি আনাজ বাজার সরানো হল রামপুরহাটে। একই ভাবে মঙ্গলবার সরানো হয়েছে মহম্মদবাজারের আনাজ বাজারও। প্রশাসনের কর্তারা জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমন নিয়ে বারবার সচেতনতা প্রচার করা হলেও রোজই বাজারে ভিড় করছেন অনেকে। বয়স্ক বা প্রবীণ মানুষরাও বাজারে ভিড় করছেন। ভিড় এড়াতে সচেতন না হলে সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন ডাক্তাররাও। মূলত এই কারণেই পুরনো জায়গাগুলি থেকে বাজার সরিয়ে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় সরানো হচ্ছে।
লকডাউন চলাকালীন রামপুরহাট শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাটতলা বাজার-সহ রামপুরহাট দুমকা সড়কের পাশে ডাকবাংলা মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে ছফুঁকো এলাকা পর্যন্ত আনাজ বাজার, ভাঁড়শালাপাড়া বাজার এবং রেলপাড়ে আনাজবাজারে জমায়েত দেখা যাচ্ছিল। জমায়েত এড়াতে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক, রামপুরহাটের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক একাধিকবার জনসাধারণের কাছে আবেদনও জানান। দূরত্ব বজায় রেখে কেনাবেচা করার জন্য রামপুরহাট পুরসভা থেকে প্রচারও করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাজারগুলিতে ভিড় কমেনি, দূরত্ব বজায় রেখেও কেনাবেচা করতে দেখা যায়নি।
শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ মহকুমাশাসক, রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক চারটি জায়গার বাজার অন্যত্র সরাতে সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রামপুরহাট ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাটতলা বাজার রামপুরহাট পুরসভার সামনে মাঠে সরানো হয়। ছফুঁকো এলাকার বাজার রামপুরহাট হাইস্কুল মাঠে সরানো হয়েছে। ভাঁড়শালাপাড়া এলাকার বাজার রামপুরহাট দুনিগ্রাম রাস্তার ধারে দিঘির পাড়ে বসছে। রেলপাড় এলাকার বাজার রেলওয়ে চিলড্রেন্স পার্কে বসছে।
সরানো হয়েছে মহম্মদবাজারের হাটতলার আনাজ বাজারটিও। তিরিশ বছর ধরে মহম্মদবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে থানা যাওয়ার রাস্তার পাশেই বসে আনাজ বাজার। লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকেই বন্ধ ছিল মহম্মদবাজারের সমস্ত দোকান ও আনাজ বাজার। তার জেরে কাঁচা আনাজ পেতেই সমস্যা হচ্ছিল স্থানীয় মানুষের। কোথাও একটু আধটু যা পাওয়া যাচ্ছিল, তার দাম ছিল চড়া। যার ফলে গরিবেরা পড়েছিলেন চূড়ান্ত সমস্যায়।
সেই কথা মাথায় রেখেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত শনিবার পুরনো হাটতলায় বসানো হয় আনাজ বাজার। বাজার শুরু হতেই এত মানুষের ভিড় দেখা যায় যে, এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। হাটতলার পাশাপাশি রয়েছে অনেক বাড়ি। ভয় পাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারাও। এর পরেই পুলিশ-প্রশাসন হাটতলা থেকে সরিয়ে সিউড়ি-সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের পাশে ফাঁকা কলোনির মাঠে আনাজ বাজারটিকে উঠিয়ে নিয়ে আসে মঙ্গলবার। সেখানেই চুন দিয়ে দাগ কেটে এক জন আনাজ বিক্রেতা থেকে আর এক জনের দূরত্ব বেঁধে দেওয়া হয়।
এ ছাড়াও এলাকার মানুষ বিক্রেতার কতটা দূর থেকে জিনিসপত্র কিনবেন, তা-ও নির্দিষ্ট দেওয়া হয় চুনের দাগ দিয়ে। বাজারে যাতে অনেকে এক জায়গায় জমায়েত করতে না পারেন, বা গল্পগুজব না হয় তার জন্য ছিল পুলিশি নজরদারি। এ ছাড়াও এ দিন বাজারে আসা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের প্রত্যেককে মুখে মাস্ক লাগানোর অনুরোধ করা হয়। পুলিশের পক্ষ বলা হয়, বাড়িতে গিয়ে সমস্ত কাঁচা আনাজ ধুয়ে নিতে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।