জমায়েত করে মসজিদে নমাজ পড়া যাবে না। মসজিদ কমিটির এই সিদ্ধান্তের পর বোলপুর নিচুপট্টি আদি মসজিদে। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে থেকেই নমাজ পড়ার বার্তা দিলেন মসজিদের ইমামরা। তাতে সাড়া দিয়ে শুক্রবারের জুম্মার নমাজ সারা হল গৃহকোণেই। তাতে এড়ানো গেল বড়সড় জমায়েত। একে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে সব মহল।
বোলপুরের সমস্ত মসজিদের সম্পাদক, সভাপতিরা ইমামদের সঙ্গে আলোচনা করে পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোডের নির্দেশ মেনে সিদ্ধান্ত নেন শুক্রবার মসজিদে মসজিদে জমায়েত করে জুম্মার নমাজ বন্ধ রাখা হবে। শুধু মসজিদের ইমাম ও যাঁরা মসজিদ দেখাশোনা করেন, তাঁরাই নমাজে অংশ নেবেন। বাকিদের বাড়িতে নমাজ পড়ার অনুরোধ জানানো হবে। সেই মতো শুক্রবার সকাল থেকে বোলপুরের সমস্ত মসজিদে জমায়েত না করার জন্য এবং বাড়িতে নমাজ পড়ার জন্য সমস্ত মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে মাইকে প্রচার করা হয়। কাজ হল তাতেই।
ইমামরা জানান, জুম্মার নমাজে প্রতিটি মসজিদে যথেষ্ঠ ভিড় হয়। এত লোক এক জায়গায় জমায়েত হলে করোনাভাইরাস সহজেই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এঁদের এক জনের কথায়, ‘‘আমরা ভিড় এড়াতে সমস্ত মসজিদ কমিটির লোকেদের সঙ্গে বসে জুম্মার দিন মসজিদে নমাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা চাই মানুষ সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন। এবং অবশ্যই ভিড় এড়ান।’’ বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস যে ভাবে ছড়িয়ে গিয়েছে তাতে যত দিন যাচ্ছে, আতঙ্ক তত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা পইপই করে জানিয়েছেন, এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব বজায় রাখা, বাড়িতে থাকা। দেশজুড়ে লক-ডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের তরফেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করা হচ্ছে সর্বস্তরের মানুষের কাছে। সেই মতোই পদক্ষেপ করলেন ইমামরা।
বোলপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৯টি মসজিদ রয়েছে। কোনওটিতেই জমায়েত চোখে পড়েনি। বোলপুর নীচুপট্টি আদি মসজিদের ইমাম সালাউদ্দিন পুরকাইত বলেন, "সকলেই নির্দেশ মেনেছেন। এতে সবারই ভাল হল।" বোলপুর বড় মসজিদ কমিটির সদস্য মহম্মদ রহিস বলেন, "যত দিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, আপাতত তত দিন আমরা মসজিদে জমায়েত করে নমাজ বন্ধ রাখছি।" বোলপুরের বাসিন্দা আমিনুল হুদা, শেখ সিরাজুল, শেখ রকিবরা বলেন, "এমন পরিস্থিতিতে আমাদেরও বাড়ি থেকে বের হতে ভয় লাগছে। তাই বাড়ি থেকে নমাজে আর না করিনি।"