জনশূন্য় পোড়ামাটির হাট।
করোনার বাড় বাড়ন্তে পর্যটনকেন্দ্রগুলি বন্ধের সরকারি ঘোষণায় আগেই মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরে বন্ধ হয়েছিল পর্যটকদের আনাগোনা । এবার প্রশাসনিক নির্দেশে বন্ধ হয়ে গেল বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী পোড়ামাটির হাট। বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আপাতত অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল সপ্তাহান্তের এই হাট।
বছর তিনেক আগে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটের আদলে রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বিষ্ণুপুরের জোড় শ্রেণির মন্দিরে শুরু হয় পোড়ামাটির হাট। সপ্তাহান্তে শনি ও রবিবার মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া এই পোড়ামাটির হাটে শুধু হস্তশিল্পীরা পসরা সাজিয়ে বসতেন এমন নয়, বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্তের লোকশিল্পীরা তাঁদের সংস্কৃতি তুলে ধরতেন হাটে। হাটে বিষ্ণুপুর শহরের মানুষের পাশাপাশি সপ্তাহান্তে ভিড় জমাতেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই হাট।
সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে রাজ্য সরকারের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরের পর্যটন। এবা র বন্ধের তালিকায় ঢুকে পড়ল পোড়ামাটির হাটও। স্বাভাবিক ভাবেই মন খারাপ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে হস্তশিল্পীদের। স্থানীয় বাসিন্দা ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পোড়ামাটির হাট শুধু হাট নয়, বিষ্ণুপুর শহরের মানুষের কাছে আবেগের জায়গা। সেই হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের মন খারাপ হয়ে আছে। শুধু শনি বা রবিবার আমরা হাটে আসতাম তাই নয়, আমরা সারা সপ্তাহে যখনই সময় পেতাম হাট চত্বরে এসে বসলে মন ভালো হয়ে যেত। এখন সেই সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে গেল।’’
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক অনুপ কুমার দত্ত বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই মন্দিরগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষ্ণুপুরে এখন পর্যটকরা আসছেন না। এই হাট হলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য আপাতত আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পোড়ামাটির হাট বন্ধ রাখা হল। এই হাট ফের কবে চালু হবে সে সম্পর্কে পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’