ভিড়ে ঠাসা। আমোদপুর (বাঁ দিকে) ও নানুরে। নিজস্ব চিত্র।
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে ভিড় নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, সরকারি আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিদের সামনেই করোনা বিষয়ক সরকার নির্ধারিত আচরণবিধি শিকেয় তুলে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল নামছে। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। শাসক তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের পাল্টা প্রশ্ন, বিরোধীদের নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে তবে তারা নীরব কেন?
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের অন্য জায়গার মতোই ১ ডিসেম্বর থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শুরুর দিনেই নানুরের পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে ওই কর্মসূচিতে হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। কর্মসূচী পরিচালনায় ছিলেন বিডিও শৌভিক ঘোষাল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুসূদন পাল, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য-সহ ব্লকস্তরের আধিকারিকরা। অভিযোগ, আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বাকিদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক দূরের কথা পারস্পরিক দূরত্বটুকুও ছিল না। অধিকাংশই ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়েছিলেন।
একই ছবি ধরা পড়েছে লাভপুর ব্লকেও। একই দিনই লাভপুর ১ নং পঞ্চায়েতের সামনে ওই কর্মসূচিতেও মানুষের ঢল নামে। হাজির ছিলেন যুগ্ম বিডিও উত্তমকুমার বিশ্বাস, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শোভন চৌধুরী-সহ ব্লক স্তরের আধিকারিকেরা। সেখানেও দূরত্ব বিধি মানা হয়নি। অধিকাংশের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে নানুরের বিডিও শৌভিক ঘোষাল এবং লাভপুরের বিডিও সন্ত দাস জানিয়েছেন, ‘‘আমরা আবেদনকারীদের মাস্ক পরে দুরত্ব বজায় রেখেই কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার জন্য প্রচার করেছিলাম। তা সত্ত্বেও পুরোপুরি আচরণবিধি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তী দিনগুলিতে আরও সজাগ হওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’ সাঁইথিয়ার জগন্নাথপুর কিসান মান্ডিতেও শনিবার কর্মসূচি ছিল। শামিল হয়েছিলেন কয়েক হাজার আবেদনকারী। জয়েন্ট বিডিও বংশীবদনবাবু-সহ হাজির ছিলেন ওসি নীলোৎপল মিশ্র, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জীবানন্দ বাগদি, সহ-সভাপতি তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রশান্ত সাধু প্রমুখ। প্রশান্তবাবু জানান, প্রচার চালিয়েও আচরণবিধি রক্ষা করা যায়নি। তবে পরবর্তী কর্মসূচিগুলিতে মানুষকে সজাগ করার চেষ্টা চলছে।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোমের নালিশ, ‘‘এর আগে ‘দিদিকে বলো কর্মসূচি’তে কারও কোনও সুরাহা হয়নি। এতেও হবে বলে মনে হয় না। মাঝখান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘গায়ের জ্বালা থেকে বিরোধীরা এ সব কথা বলছেন। ১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী যখন উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশ করবেন তখন বিরোধীরা বুঝতে পারবেন কত মানুষ উপকৃত হয়েছেন।’’