ব্যারিকেড পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বিলতোড়া গ্রামেও। নিজস্ব চিত্র
‘তফাত যাও’—বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকে বার্তা দিচ্ছে গ্রাম।
করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে তৎপর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। দেশ জুড়ে জারি ‘লকডাউন’। ভিড় জমালেই লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করছে পুলিশ। যদিও বাস্তব বলছে, বেশ কিছু মানুষ এখনও ঘরের থাকার পরামর্শ না মেনে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ বার গ্রামে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে রাস্তার মুখে বাঁশের বেড়া বাঁধছেন মানুষ।
বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমার একাধিক গ্রামে ইতিমধ্যেই করোনা-মোকাবিলায় এই পন্থা নিয়েছে। গ্রামের রাস্তায় ‘নাকা’ তৈরি করছেন তাঁরা। নিজেরাও বাইরে বেরনো বন্ধ করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ বাঁকুড়ার কম-বেশি ২২টি গ্রামের রাস্তা ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
খাতড়া-মুকুটমণিপুর রাস্তার উপরে স্পোর্টস কমপ্লেক্স লাগোয়া আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম খড়িডুংরি। বুধবার গ্রামে ঢোকার রাস্তা বাঁশ দিয়ে ‘সিল’ করে দিয়েছেন গ্রামের যুবকরা। স্থানীয় যুবক রঞ্জিত মুর্মু বলেন, ‘‘গ্রামে প্রায় একশো পরিবারের বাস। মুকুটমণিপুর বেড়াতে এসে পর্যটকদের অনেকেই গ্রামে ঢুকে পড়েন। এখন যদিও পর্যটকদের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ। কিন্তু অন্য গ্রাম থেকেও যাতে কেউ ঢুকতে না পারেন, সে জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুব প্রয়োজনেই গ্রামের বাইরে যাচ্ছি।’’
সিমলাপালের বিক্রমপুর পঞ্চায়েতের পুখুরিয়া গ্রামের যুবকেরা বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামে ঢোকার রাস্তা। স্থানীয় কুমারেশ কর্মকার এবং সোমনাম কর্মকার জানান, গ্রামে ঢোকার তিনটি রাস্তা রয়েছে। তিনটিই বাঁশ দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া, গ্রামের বাইরে কেউ যাচ্ছেন না। আত্মীয় পরিজনেরাও যাতে না আসেন, সে অনুরোধও করা হয়েছে। বহিরাগতদের যাতায়াত বন্ধ করতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রানিবাঁধের মহেশপুর ও ডাবরি গ্রামের রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে।
মহকুমাশাসক (খাতড়া) রবি রঞ্জন বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ তাঁদের মতো করে গ্রামকে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছেন। সরকারি ভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। ‘লকডাউন’ চলাকালীন কেউ যাতে বাড়ির বাইরে না যান, সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সব সময় কাজ করছে।’’