অনলাইন-আলাপ। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে সাধারণের মধ্যে। লকডাউন চলাকালীন কী করা যাবে, কী করা যাবে না, তা নিয়েও বিভ্রান্তি চরমে। তাঁদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে চায় প্রশাসন। এবং তা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে তৃণমূল স্তর থেকে তথ্য আদায়ে প্রশসানের তরফে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে অনেক ব্লকে। এ বার ভিডিয়ো কল পরিষেবা চালু করল বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসন। সোমবার প্রশাসনের তরফে এই পরিষেবা চালু হয়েছে। প্রশাসনের থেকে লকডাউন বা করোনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তথ্য জানতে বা প্রশাসনকে সেই তথ্য জানাতে এই পরিষেবা চালু হয়েছে।
যে নম্বরে ভিডিয়ো কল করতে হবে, সেই নম্বরটি বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। মহকুমাশাসকের কার্যালয়েও সেই নম্বর লেখা কাগজ দেওয়ালে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “সরকারি পরিষেবা বা লকডাউন বিষয়ে সাধারণের অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। তাঁরা যাতে মহকুমা দফতরের বিভিন্ন আধিকারিক ও কর্মীদের ভিডিয়ো কল করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হল।’’ কেন ভিডিয়ো কল পরিষেবা? মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘অনেক সময় সাধারণ মানুষ ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হতে পারে না। তাই এই উদ্যোগ। এমনকি এলাকায় কোনও অপরিচিত দেখলে তাঁরা জানাতে পারবেন প্রশাসনকে। সে ক্ষেত্রে তদন্ত করা হবে।”
কেউ অসুবিধায় পড়লে ভিডিয়ো কল করে সারাসরি তাঁ সমস্যার কথা জানাতে পারবেন আধিকারিকদের। ভিডিয়ো কলে তাঁদের বক্তব্য শুনবেন মহকুমাশাসক কার্যালয়ের একাধিক আধিকারিক। থাকবেন খোদ মহকুমাশাসক। থাকবেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিক সোমনাথ পাল, দেবর্ষি মুখোপাধ্যায় এবং ধ্রুবচন্দ্র বিশ্বাস। কার্যালয়ের অন্য কয়েকজন আধিকারিকও থাকবেন। ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে এই পরিষেবা। আধিকারিকেরা ভিডিয়ো কলে থাকবেন সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। কর্মীরা থাকবেন রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত। গভীর রাতে কোনও ব্যক্তি জটিল কোনও সমস্যার কথা জানালে, তা মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে তৎক্ষণাৎ পৌঁছে দেওয়া হবে।
এ দিন ভিডিয়ো কল করে রসিকগঞ্জের রমা দত্ত প্রশাসনের আধিকারিকদের বলেন, “আমাদের এলাকার অনেকেই বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলেন, তাঁরা ফিরে আসছেন। প্রতিবেশী হওয়ায় আমরা কিছু বলতে পারছি না তাঁদের। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’
বিষ্ণুপুর পুরসভার ১৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা নন্দী ভিডিয়ো কলে মহকুমাশাসককে বলেন, “শুনছি লকডাউন-এর সময় আনাজ বাজার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আনাজ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করা শুরু হয়ে গিয়েছে। দোকানের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। তাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে।’’ এরপর তাঁর প্রশ্ন, ‘‘প্রশাসন কী ভাবছে?”
মহকুমাশাসক তাঁকে বলেন, “আনাজ বাজার বন্ধ থাকবে না। এটা নিতান্তই গুজব। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেতে কোনও অসুবিধে হবে না। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আধিকারিকদের নিয়ে একটি দল গড়া হয়েছে। তাঁরা নজরদারি চালাচ্ছেন।’’