বিষ্ণুপুরের পিয়ারডোবায় রেশন দোকানে গণ্ডির মধ্যে ক্রেতা। নিজস্ব চিত্র
রেশনে বিলি করার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যদ্রব্য পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় মজুত আছে বলে আশ্বস্ত করল প্রশাসন। বাঁকুড়ার ডিস্ট্রিবিউটরদের একাংশের দাবি, তাঁদের কাছে এই মুহূর্তে যা রেশনসামগ্রী রয়েছে, তাতে এক মাসেরও বেশি সময় সরবরাহ চালিয়ে দেওয়া যাবে। পুরুলিয়ার ডিস্ট্রিবিউটরেরা জানাচ্ছেন, এপ্রিলের রেশন ইতিমধ্যেই ডিলারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
বুধবার রেশন ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের সংগঠনের সঙ্গে খাদ্য দফতরকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। জেলা খাদ্য নিয়ামক শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, গণবন্টন ব্যবস্থায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য ওই বৈঠক। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের কাছে রেশন পৌঁছে দেওয়াটাই লক্ষ্য।’’
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সীমা হালদার বলেন, ‘‘রেশনে কোনও ঘাটতি নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত বণ্টন করা হচ্ছে। ভিড় যাতে না হয়, সে দিকেও আমাদের নজর রয়েছে।’’
পুরুলিয়া জেলা জুড়ে ১,০৮০টি রেশন দোকান রয়েছে। ডিস্ট্রিবিউটরেরা গুদাম থেকে সরাসরি ডিলারদের কাছে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দেন। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিস্ট্রিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক দেবকুমার দাঁ বলেন, ‘‘গুদাম থেকে চাল-গমের বস্তা ট্রাকে তোলা, দোকানে নামানো— এই সব কাজে লোক লাগে। অনেক জায়গাতেই শ্রমিকের সমস্যা হচ্ছে।’’
দেবকুমারবাবুর দাবি, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলায় অনেক শ্রমিক কাজ করতে রাজি হয়েছেন। তবে শ্রমিকেরা কাজ করার সময়ে ‘মাস্ক’ চাইছেন। সেটা বাজারে মিলছে না। আপাতত সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।
‘ওয়েস্টবেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক প্রভাশিসলাল সিংহ দেও এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফেয়ারপ্রাইস এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো বলছেন, ‘‘আমরা বলেছি, বেশি সময় ধরেও পরিষেবা দিতে রাজি আছি। তবে, আমাদের কর্মীদের জন্য মাস্কের ব্যবস্থা করে দিলে ভাল হয়।’’
বাঁকুড়া শহরের রেশন ডিলার উত্তম গড়াইও জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে রেশন বিলি করছেন তাঁরা। খাদ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।
তবে সরবরাহ নিশ্চিত করা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রশাসন নিশ্চিত করুক, চাইছেন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরেরা। দেবকুমারবাবু বলেন, ‘‘প্রশাসনকে জানিয়েছি, এই পরিষেবায় কোনও বিঘ্ন ঘটবে না। তবে গাড়ি যাতে আটকে না পড়ে, তা প্রশাসনকেই দেখতে হবে।’’
প্রশাসনের নির্দেশ মেনে দোকানের সামনে ভিড় ঠেকাতে চুন দিয়ে ঘর কেটে দিচ্ছেন পুরুলিয়ার ডিলাররা। দেওয়া হচ্ছে তবে, এর পাশাপাশি ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে প্রশাসনেরও হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। নিরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আগামী এক মাসের রেশন যদি আমাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, তা হলে এক সঙ্গে গ্রাহকদের দিয়ে দেওয়া যাবে। তাতে ভিড় অনেকটা কমতে পারে।’’