ফের বাঁকুaড়ায় মানুষের মুখে দেখা যাচ্ছে মাস্ক। শুক্রবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
ওমিক্রনের উপপ্রজাতি ‘বিএফ.৭’-এর খোঁজে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য বাঁকুড়া মেডিক্যালকে করোনা আক্রান্তদের লালারস পাঠাতে নির্দেশ দিল রাজ্য। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় করোনা আক্রান্তদের লালারস স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে পাঠানো হবে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “কোভিড নির্ণয় পরীক্ষা মেডিক্যালে চালু রয়েছে। তবে এ বারে আক্রান্তদের লালারস জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কলকাতার ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হবে।” বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “মেডিক্যাল থেকে ওই লালারস নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠাবে।”
ওমিক্রনের উপপ্রজাতি ‘বিএফ.৭’-এর সংক্রমণ প্রথমে চিহ্নিত করতে রাজ্য সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছে জেলাকে। সূত্রের খবর, কোভিড পরিস্থিতিতে জেলার ওন্দা ও বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটিতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছিল। ওই প্ল্যান্টগুলি সচল রয়েছে কি না, জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। এ নিয়ে শীঘ্র রাজ্যের স্বাস্থ্য-কর্তারা ভিডিয়ো কনফারেন্স করবেন বলেও জেলাকে জানিয়েছে।
এ দিকে, বাঁকুড়া জেলায় বেশির ভাগই করোনার প্রতিষেধক নিলেও তাঁদের মধ্যে কেবল ৩০ শতাংশই বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন বলে খবর সূত্রের। যা নিয়ে চিন্তা দানা বেঁধেছে স্বাস্থ্য দফতরে। ওমিক্রনের নতুন প্রজাতির সঙ্গে লড়তে বুস্টার ডোজ়ের উপরে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। তবে জেলায় বুস্টার ডোজ়ও বিশেষ মজুত নেই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় এই মুহূর্তে প্রায় দেড় হাজার বুস্টার ডোজ় মাত্র মজুত রয়েছে। বাঁকুড়ার ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) সজল বিশ্বাস বলেন, “জেলায় মজুত থাকা বুস্টার ডোজ় দ্রুত শেষ করে রাজ্যের কাছে আমরা ফের ডোজ় চাইব। সাধারণ মানুষকে বুস্টার ডোজ় নিতে সচেতন করা হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে আরও খবর, রাজ্যের তরফে জেলার প্রতিটি ব্লকে পর্যাপ্ত সংখ্যায় র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্ট (র্যা ট)-এর কিট মজুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন ব্লকে কত ‘র্যা ট’ কিট মজুত রয়েছে, সেই রিপোর্ট চেয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ব্লকে ব্লকে ওই কিট পাঠানোর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, শীতের মরসুমে মুকুটমণিপুর, শুশুনিয়ার মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে মানুষের আনাগোনা বেশি। তাই সেখানে বেশি পরিমাণ কিট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, মাস্ক ব্যবহার, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারে সচেতন করতেও প্রচার শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। ওই আধিকারিক বলেন, “মাস্ক পরা ও কোভিড-বিধি মেনে চলা নিয়ে সমস্ত মহলেই সতর্ক করা হচ্ছে। বেশ কিছু জায়গায় মানুষ ইতিমধ্যে সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহার করছেন বলে নজরে এসেছে। এটা ভাল লক্ষণ।”